পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামতনু লাহিড়ী"। । ` ' ' ३२७ বুঝাইয়া দিতেন। তঁহার অধ্যাপনা-প্ৰণালী দর্শনে কলেজের অধ্যক্ষ অনেক সময় বিস্ময় বিমুদ্ধ ভাবে দাডাইয়া থাকিতেন। তঁহার পড়াইবার প্ৰণালীতে ছাত্রবৃন্দের হৃদয়ে জ্ঞানান্বেষণ-পৃহা বলবতী হইয়া উঠিত। বিদ্যালয়ের ছুটির পরও তিনি ডিরোজিওর আদর্শে বালকদিগের সহিত প্রকার বিষয়ের আলোচনা করিতেন । কলেজের প্রাঙ্গণে খেলার সময় বালকদিগের সহিত ক্রীড়ায়ও যোগ দিতেন। এই সময়ে কৃষ্ণনগরে ধৰ্ম্ম ও সমাজসম্বন্ধে ঘোরতর আন্দোলন চলিতেছিল। কলিকাতার ব্ৰাহ্মসমাজের নেতৃবৰ্গ নিজেদের অবলম্বিত ধৰ্ম্মকে বেদস্তুধৰ্ম্ম ও বেদ অভ্রান্ত, ঈশ্বরের বাণী বলিয়া প্রচার করিয়াছিলেন। খৃষ্টানের ধৰ্ম্মের প্রতি তাহারা অগ্ৰীতিকর মন্তব্যও প্রকাশ করিতে লাগিলেন। ডিরোজিওর শিষ্যবৰ্গ এই দুই প্রকার কাৰ্য্যকেই সমর্থনের অযোগ্য বলিয়া মনে করিয়াছিলেন । রামতনু ও তাহদের অন্যতম। তিনি ব্রাহ্মসমাজের এই ব্যবহার অত্যন্ত অনুদারতার পরিচায়ক মনে করিয়া, উহার সহিত সংস্রব রাখিলেন না। এমন কি “তত্ত্ববোধিনী” পত্রিকা পৰ্য্যন্ত গ্রহণে অসম্মতি প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। ব্ৰাহ্মসমাজ কাজে ও কথায় এক হইতে পারেন নাই বলিয়া প্রথমতঃ তিনি তঁহাদের সহিত মিশিতে পারেন নাই । যখন “উন্নতিশীল” ব্ৰাহ্মসংঘ, সমাজ ও ধৰ্ম্মের সকল প্রকার বন্ধনমুক্ত হইয়া আসরে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, সেই সময়ে রামতনু সেই দলে মিশিয়া গিয়াছিলেন। রামতনুর মধ্যে কপটতা ছিল। না। তিনি যাহা সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিতেন, তাহার সহিত সম্পূর্ণরূপে মিশিয়া যাইতেন। তঁহার মন্ত্র ছিল, চিন্তা ও কাৰ্য্যে মানুষ স্বাধীন ভাবেই থাকিবে। এই মন্ত্রের সার্থকতা সাধন করিবার জন্য তিনি কাৰ্য্য করিতেন। মনের বিশ্বাসের বিরোধী কোনও কাৰ্য্য তিনি জীবনে কখনও করেন নাই।