পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়।. ' ' va RQ উৎকৃষ্ট, সারগর্ভ, প্রখর প্রতিভার পরিচায়ক বাঙ্গালা গ্ৰন্থ সে সময় রচিত হয় নাই। এই গ্ৰন্থ-সূচনায় তিনি গদ্য-সাহিত্যের গঠন ও অর্থনির্ণয়-প্ৰণালী লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন। তঁহার রচিত। ইংরাজী ও বাঙ্গালা গ্ৰন্থ, সকল পাঠে বুঝা যায় যে, তিনি তঁহার নিন্দাকারী ও প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্ডিতগণের বিদ্রুপ ও লাঞ্ছনায় কিছুমাত্র বিচলিত হইতেন না। রামমোহনের সময়ে সহমরণ-প্রথা প্রচলিত ছিল। পতি-বিয়োগ-বিধুরা সাধাৰীগণ জ্বলন্ত চিতায় আত্মাহুতি প্ৰদান করিতেন। কিন্তু সকল রমণীই যে স্বেচ্ছায় অনলে আত্মবিসর্জন করিতেন, এমন কথা বলা যায় না। সহমরণে কুষ্ঠিতা ভীতা রমণীর সমাজে ঘূণা, গ্লানি ও নিন্দার সীমা থাকিত না । জ্বলন্ত চিন্তানল সহ করিতে না পারিয়া অভাগিনী কুসুমকোমলা রমণী আৰ্ত্তনাদে গগন বিদীর্ণ করিয়া চিতাগ্নি হইতে বহির্গত হইবার প্রয়াস পাইতেছে, আর আত্মীয়গণ বাদ্য-নিনাদে ও জয়োল্লাসে তাণ্ডব-নৃত্য করিতেছে-বংশদণ্ড দ্বারা রমণীকে বলপূর্বক চাপিয়া ধরিতেছে! এই বীভৎস নিষ্ঠুর মৰ্ম্মস্তৃন্দ কাণ্ডে রামমোহনের হৃদয় কাতর হইল। তিনি এই কুপ্রথা রহিত করিবার। ஈரணு দৃঢ় সংকল্প হইয়া ১৮১৮-১৯ খৃষ্টাব্দে সতীদাহ-প্রথার বিরুদ্ধে বাঙ্গালা ও ইংরাজীতে “নিবৰ্ত্তক” ও “প্ৰবৰ্ত্তক” নামে দুইখানি গ্ৰন্থ প্রণয়ন করেন, এবং আন্দোলনে প্ৰবৃত্ত হন । এই গ্ৰন্থপাঠে তৎকালীন গভর্ণর লর্ড বেন্টিঙ্ক এই কুপ্রথা-নিবারণের জন্য আইন বিধিবদ্ধ করেন। ১৮২৯ খৃষ্টাব্দে আইনবলে ভারতবর্ষ হইতে সহমরণ-প্রথা উঠিয়া যায়। নূতন ধৰ্ম্মমতস্থাপনের প্রয়াস পাইয়া রামমোহন হিন্দুসমাজে লাঞ্ছিত, অবজ্ঞাত হইয়া- ? ছিলেন ; সহমরণ-প্রথা নিবারিত হওয়াতে সকলেই তঁহাকে নাস্তিক, ভণ্ড ওঁঠুবিধৰ্ম্ম বলিয়া নিন্দা করিতে লাগিল। কিন্তু এই নিন্দাবাদে