পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় আমার দণ্ড রহিত করবেন, আমি তাঁর কলেজে দর্শনে অনার্স নিয়ে পড়তে চাই।

বোঝা গেল আমার সঙ্গে কথাবার্তায় তিনি খুশি হয়েছেন, কারণ স্কটিশ চার্চ কলেজে প্রবেশের অনুমতি সহজেই মিলল। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রিন্সিপ্যাল যদি বাধা না দেন, এবং তাঁর আপত্তি নেই এই মর্মে যদি একটি চিরকুট এখানে উপস্থিত করা যায় তবে পথ উন্মুক্ত। কিন্তু এই আপাতসামান্য বাধা দূর করা আমার পক্ষে নিতান্ত সহজ ছিল না। মেজদা শরৎচন্দ্র বসু তখন কলকাতায় আমার তত্ত্বাবধায়ক, তিনিই অবশেষে এ কাজের ভার নিলেন। আলাপ-আলোচনায় ওয়ার্ডস‍্ওয়ার্থ সাহেবের মনোভাব নাকি মোটামটি প্রসন্নই, তবে কিনা আমার সঙ্গে তাঁর একবার সাক্ষাতের প্রয়োজন। অতএব ওয়ার্ডস‍্ওয়ার্থ সাহেবের দরজায় হাজির হলাম। গত বৎসরের ঘটনা সম্বন্ধে দীর্ঘ জোরার ধাক্কা সামলাতে হল। অবশেষে তিনি মত দিলেন যে অতীতের চেয়ে ভবিষ্যৎটাই অধিক জর‍ুরি, অতএব তিনি আমার পথ আগলে দাঁড়াবেন না। এর বেশি আমার আর কিছু প্রয়োজন ছিল না। প্রেসিডেন্সি কলেজে ফিরে যাবার ইচ্ছা ছিল না বিন্দুমাত্র।

কলেজে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়া নিয়ে আবার মেতে উঠলাম। ইতিমধ্যে দুটি বৎসর খুইয়েছি, জুলাই ১৯১৭ সালে যখন আবার থার্ড ইয়ারে ভরতি হলাম তখন আমার পূর্বতন সহপাঠীরা বি. এ.র কোঠা পেরিয়ে এম. এ.তে পা দিয়েছে। কলেজে দিন কাটতে লাগল অখণ্ড শান্তিতে। ডক্টর আরকিউহার্টের মতো বিবেচক প্রিন্সিপ্যাল বর্তমান থাকতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঠোকাঠুকির কোনো সম্ভাবনা ছিল না। তিনি ছিলেন দর্শনের পণ্ডিত, কিন্তু দর্শন ছাড়া বাইবেলের উপরও বক্ত‌ৃতা করতেন। তাঁর বাইবেলের পাঠ ছিল

৮(৪৪)
১১৩