পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গেছে। চার মাস ক্যাম্প-জীবন কাটল বিপুল আনন্দে। কিছুদিন শ‍ুধ‍ু বেলঘরিয়ায় চাঁদমারি চর্চায়ই অতিবাহিত হল। সন্ন্যাসীর পায়ের তলায় সে ভগবৎলীলা শ্রবণ থেকে ইংরেজ আর্মি অফিসারের হুকুমে রাইফেল কাঁধে ঘাড় ফেরানো—কী বিপুল পরিবর্তন!

প্রত্যক্ষ সংগ্রামে, আমরা যাইনি, সত্যিকারের রোমহর্ষক কিছু আমাদের জীবনে ঘটল না। তবু ক্যাম্প-জীবন সম্বন্ধে আমাদের উৎসাহ ছিল অসীম। এর আগে কখনো সৈনিক-জীবনের স্বাদ পাইনি, তব যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের একজোট হয়ে থাকার যে বন্ধন, যাকে বলা হয় ‘এস‍্প্লি দ্য কোর’, তাকে অনেকখানি উপভোগ করেছিলাম ক্যাম্প-জীবনে। কুচকাওয়াজ ছাড়া নানারকম অবসর বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল, সরকারী বেসরকারী দুরকমেরই। খেলাধূলারও চর্চা হত যথেষ্ট। শিক্ষানবিশীর শেষভাগে অন্ধকারে নকল যুদ্ধ হত, তার উত্তেজনা ছিল প্রবল। দলে হাসির খোরাক যোগাবার লোকও ছিল, তাদের ঠাট্টা করে দিন কাটত মন্দ নয়। গোড়ার দিকে তাদের একটা আলাদা দল করে দেওয়া হয়েছিল যার নাম ছিল ‘অকওয়ার্ড স্কোয়াড’, অর্থাৎ কি না ‘গঙ্গারামের দল’। উন্নতি করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের নিয়মিত প্ল্যাটুনে ভরতি করে নেওয়া হত। এদের মধ্যে একজনের আমরা নাম দিয়েছিলাম জ্যাক জনসন। সে আর কোনোদিনই হাঁদা গঙ্গারামত্বের মায়া কাটাতে পারল না, শেষ পর্যন্ত তার অঙ্গভঙ্গী ছিল বিচিত্র, অফিসার কমাণ্ডিং-এর পর্যন্ত তাকে মেনে নেওয়া ছাড়া গতি ছিল না।

আমাদের ও. সি. ক্যাপটেন গ্রে ছিল অদ্ভুত এক চরিত্র। এমনিতে সে রাঙ্কার, বৃটিশ আর্মির অভিজাত সন্তান। তার চেয়ে ভালো শিক্ষক কোথায় মিলবে আমি জানি না। রুক্ষপ্রকৃতির স্কচ্, মোটা কর্কশ

১১৫