পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছদিনের মধ্যেই আমার পাসপোর্ট আদায় হয়ে গেল। বিচিত্র ব্যাপার বটে!

আমার জীবনে আবার অপ্রত্যাশিত মোড় ঘুরে গেল আমারি ইচ্ছায়। দলের কাছে যখন বিলেত যাত্রার কথা তুলেছিলাম তখন তারা সেটাকে মোটে আমলই দেয়নি। ইতিপূর্বে দলের একজন উৎসাহী কর্মী বিলেত গিয়ে সেখানেই বিয়ে করে বসবাস করছেন। এমন নমুনার পর আবার ঝুঁকি নেওয়া কেন? কিন্তু আমার প্রতিজ্ঞা অটল। দলের একজন বিপথে গেছে তাতে কী? অন্যেরাও যে তার পথই অনুসরণ করবে তার কোনো স্থিরতা নেই। কিছুদিন যাবৎ দলের সঙ্গে আমার যোগটা ঢিলে হয়ে আসছিল। ইউনিভার্সিটি ট্রেনিং কোর-এ যোগ দেবার সময় আমি তাদের সঙ্গে পরামর্শ করিনি। এবার একেবারে যবনিকাপাত। মুখে কেউই কিছু বললাম না বটে, কিন্তু নিজের আলাদা পথ তৈরির স্বপ্নে আমি এতই মশগ‍ুল হয়ে উঠেছিলাম যে মিলিত পথের শেষ এখানেই, এটা বুঝতে কার‍ুর সময় লাগেনি।

এরপর ইংলণ্ডে শিক্ষালাভ সম্পর্কে প্রাদেশিক উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আবার প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক। আমাকে তিনি দেখেই চিনলেন। কলেজ-খেদানো ছাত্র সম্বন্ধে তাঁর ধারণাটা যে তেমন উঁচু ছিল না সেকথা বলাই বাহুল্য। আমি আই. সি. এস. পরীক্ষা দিতে চাই শোনামাত্র তাঁর সমস্ত শক্তি নিয়োগ করলেন আমাকে নিবৃত্ত করার জন্য। অক্সফোর্ড-কেব্রিজের নিখুঁত ছাত্রদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার আশাই বাতুলতা, সুতরাং দশ হাজার টাকা আর জলে ফেলে দেওয়া কেন? বারবার এই কথাটারই তিনি পুনরাবৃত্তি

১১৯