পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বদল করে নেবার ক্ষমতা জন্মাত, নানা বিষয়ে অল্প অল্প জানার দর‍ূন শাসনকার্যে সুবিধাও মিলত কিছটা। ন'টা বিষয়ে যখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিতে বসলাম তখন একথা হাড়ে হাড়ে বুঝতে হয়েছিল। তার মধ্যে সবকিছু আমার পরবর্তী জীবনে কাজে লাগেনি কিন্তু রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, ইংলণ্ডের ইতিহাস, আধুনিক যুৱোপীয় ইতিহাস যে উপকারী হয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। বিশেষত আধুনিক য়ুরোপীয় ইতিহাস পড়বার আগে পর্যন্ত মহাদেশীয় য়ুরোপের রাষ্ট্রনীতি সম্বন্ধে কিছুই বুঝিনি। আমরা ভারতীয়রা যে শিক্ষা পাই তাতে য়ুয়োপ হচ্ছে গ্রেট ব্রিটেনেরই বৃহৎ সংস্করণ মাত্র। ফলে য়ুরোপকে বৃটেনের চোখ দিয়ে দেখবার একটা প্রবণতা আমাদের মধ্যে এসে পড়ে। এটা অবশ্যই বিরাট ভুল, কিন্তু আধুনিক য়ুরোপীয় ইতিহাস ও বিশেষত বিসমার্কের আত্মজীবনী, মেটারলিঙ্কের স্মৃতিকথা, কাভুৱের চিঠিপত্র ইত্যাদি পড়বার আগে তা জানা ছিল না। কেম্ব‌্রিজে থাকাকালীন এই মুল বইগ‍ুলি পড়াতেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির গ‍ূঢ় ধারাকে আমি আয়ত্ত করতে শিখেছিলাম।

১৯২০ সালের জুন মাসের গোড়ার দিকে সিভিল সার্ভিস প্রতিযোগিতার পরীক্ষা শ‍ুর‍ু হল। একমাস ধরে তার টানা হেচঁড়া চলবার পর অবশেষে যখন শেষ হল তখন শরীর মন ভেঙে পড়তে চায়। যথেষ্ট খেটেছিলাম তবু আশানুর‍ূপ তৈরি হতে পারিনি। কাজেই বিশেষ উৎসাহিত বোধ করতে পারছিলাম না। অসংখ্য কৃতী ছাত্র বহু বছরের প্রস্ত‌ুতির পরও এ পরীক্ষায় ডুবেছে, কাজেই তেমন উৎসাহিত হতে হলে বেশ খানিকটা অহঙ্কার দরকার। সংস্কৃত পরীক্ষায় যখন নিশ্চিত ১৫০ মার্ক বোকামি করে হারালাম তখন আশঙ্কার কারণটা আরো বাড়লো। ইংরিজি থেকে সংস্কৃত অনুবাদের

১৩৩