পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমাদের স্কুলটা ছিল মিশনারিদের, আর এখানকার বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই ছিল য়ুরোপীয় কিংবা অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ন। ভারতীয়দের জন্য গোনাগুনতি কয়েকটা (শতকরা বোধ হয় ১৫টা) সীট ছিল। আমার অন্য ভাইবোনেরাও এই স্কুলেই পড়ত, কাজেই আমিও এখানে ভরতি হলাম। বেছে বেছে এই স্কুলেই আমাদের কেন ভরতি করা হয়েছিল জানিনে, হয়তো অন্য সব স্কুলের চাইতে এখানে ইংরিজিটা তাড়াতাড়ি এবং ভালো শেখা যেত বলেই—আর তখনকার দিনে ইংরিজিজ্ঞানের বিশেষ কদরও ছিল। এখনো মনে আছে ভরতি হবার সময়ে আমার ইংরিজি বিদ্যের দৌড় বর্ণপরিচয়ের বেশি ছিল না। একটাও ইংরিজি কথ্য না জেনেও আমি কি করে যে চালিয়ে নিতাম এখন ভাবলে আশ্চর্য মনে হয়। প্রথম প্রথম ইংরিজি বলতে গিয়ে যে কি বিভ্রাট হত ভাবলে হাসি পায়। একটা ঘটনা মনে পড়ে। একবার আমাদের সকলের হাতে একটি করে স্লেট পেনসিল দিয়ে আমাদের শিক্ষয়িত্রী বলেছেন সেগুলোকে ছুঁচোলো করে নিতে। আমি দেখলাম কাকার চাইতে আমার পেনসিলটা বেশি ছুঁচোলো হয়েছে—অমনি ইংরিজিতে শিক্ষয়িত্রীকে সেটা জানিয়ে দেবার জন্য বললাম—“রনেন্দ্র মোট, আই শোর” বলেই মনে মনে নিজের ইংৱিজিজ্ঞানের তারিফ না করে পারলাম না।

আমাদের মাস্টারদের মধ্যে প্রায় সকলেই ছিলেন অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান—তার মধ্যে আবার শিক্ষয়িত্রীর সংখ্যাই ছিল বেশি। শ‍ুধু প্রধান শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষয়িত্রী মিস্টার এবং মিসেস্ ইয়াং ইংলণ্ড থেকে এসেছিলেন। এদের মধ্যে অল্প কয়েকজনকেই আমরা পছন্দ করতাম। মিষ্টার ইয়াংকে আমরা ভক্তি করতাম ঠিকই, কিন্তু ভয়ও করতাম সাংঘাতিক, কারণ তিনি বেতটা একটু বেশিই ব্যবহার করতেন। মিস্

২৪