পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভিত্ৰিমণ । সম্বন্ধেও কোনরূপ প্ৰমাণ কিংবা জনরব না থাকিলে কখনই এইরূপ একটা প্ৰবাদ প্ৰচলিত হইতে পারিত না । প্রথমতঃ ইহার দ্বারদেশ উত্তরদিকে অবস্থিত। দ্বিতীয়তঃ দ্বিতীয় আকবর সাহার সভাসদ সৈয়দ মহম্মদ নামক জনৈক মুন্সী লিখিয়াছেন যে “কোনও হিন্দু নরপতি তদীয় কন্যার প্রতিদিন যমুনা দর্শনের সুবিধার জন্য ইহা নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন।” যদি তাঁহাই হয় তাহা হইলেও কুতবের অবস্থা দৃষ্ট এবং মুসলমান শিল্পীগণের কারুকাৰ্য্যাদি দর্শনে স্পষ্টই বুঝিতে পারা যায় যে মুসলমানগণের হস্তেই ইহার নিৰ্ম্মাণকাৰ্য্য শেষ হয়। কুতবমিনারের নিৰ্ম্মাণ সম্বন্ধে প্ৰাচীন ইতিহাস যতটা জানিতে পারা যায় তাহাতে বোধ হয় যে ইহা ১২০০ খ্ৰীঃ অব্দে বা প্ৰায় তৎকালে আরব্ধ হইয়া ১২২০ খ্ৰীষ্টাব্দে রাজা সামসউদ্দীন আলতামস কর্তৃক পরিসমাপ্তি হয়। মিঃ বেগালার সাহেব আকিয়লজিকেল সার্ভের এক বার্ষিক বিবরণে কুতবকে হিন্দু-নিৰ্ম্মিত বলিয়া প্ৰমাণিত করিবার জন্য বহু চেষটা করিয়াছিলেন । ইহার গাত্ৰস্থ অলঙ্কার সমূহের মধ্যে হিন্দু শিল্পিগণের ভাবনৈপুণ্য ও হিন্দুরীতি অনুযায়ী নিৰ্ম্মিত বলিয়া কেহ কেহ বলেন যে কুতবের প্রধান শিল্পী মুসলমান ছিলেন এবং অন্যান্য শিল্পিগণ হিন্দু ছিলেন কাজেই হিন্দুভাবের আধিক্য ইহাতে দৃষ্ট হইয়া থাকে। চিতোরের জয়স্তম্ভ বা (Tower of victory) ব্যতীত ভারতের আর কোথাও এইরূপ বিরাট স্তম্ভ দৃষ্ট হয় না। কথিত আছে যে প্ৰায় ২৭টি ভিন্ন ভিন্ন হিন্দু-মন্দিরের উপাদান লইয়া কুতব মিনার নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। প্ৰায় ৬০০ বৎসর হইল কুতবা এমনি করিয়া দণ্ডায়মান হইয়া অতীতের সাক্ষ্য দিতেছে। সে অতীতের কত কি দৃশ্য অবলোকন । করিয়াছে। কত রণজয়নাদ, কত সাম্রাজ্যের উত্থান পতন তাহার নয়নসমক্ষে সংঘটিত হইয়া গিয়াছে কিন্তু সে তেমনি দাড়াইয়া আছে। কত দেশের কত জাতির কত বিভিন্ন শ্রেণীর পরিব্রাজক ইহাকে দর্শন করিতে আসিয়াছিল, কত কবি, কত চিত্রকর নিজ নিজ কবিতায় নিজ নিজ চিত্রে ইহার মহিমান্বিত গৌরব-ছবি অঙ্কিত করিয়াছিলেন, এখন তাহারা কোথায় ? কালসাগরের তরঙ্গাঘাতে সে সমুদয় বিলীন হইয়া গিয়াছে। অসির ঝনঝনায় কামানের ভৈরবগৰ্জনে লেলিহান জিহবা প্রসারণ করিয়া দিল্লীতে যখন እy@b”