পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'ভারত-ভ্ৰমণ । গোবিন্দ-বেণুমনুমন্ত ময়ুর নৃত্যং প্ৰেক্ষ্যাদ্রি সাম্ব পরিত্যান্য সমস্ত সত্ত্বম | ( শ্ৰীভাগবত ১০৷৷২১৷৷১০ ) বৃন্দাবনে আমার নিকট সর্বাপেক্ষা সুন্দর লাগিয়াছিল বিশীর্ণ যমুনার কল-কল্লোল ও তাহার দৃশ্য। যদিও এখন বঁাশীর তানে যমুনা-সুন্দরী উজান বহেন না—তথাপি প্রতিতিরঙ্গ উচ্ছাসে কি যেন কি এক বিষাদকাহিনী—কি যেন করুণ মনোবেদনা ব্যক্ত হইয়া পড়িতেছে। যমুনা যেন— ভারতমাতার অশ্রুরাশিদ্বারা গঠিত বলিয়া বোধ হইতেছিল। কোথায় সেই অতীতের সুখস্বপ্ন আর কোথায় বৰ্ত্তমানের হতাশ্বাস। অতীত ও বৰ্ত্তমানের তুলনায় অতীত যেমন আমাদিগের মনোহরণ করে—বৰ্ত্তমানের মধ্যে সে মাদকতা দেখিতে পাই না । বৃন্দাবনের রজই বৃন্দাবনের সম্পত্তি। এই ধূলি-সম্পত্তি বিক্রয় করিয়াও বহুলোক জীবন ধারণ করিতেছে । যোগমায়া --গোবিন্দজীর মন্দির পাশ্বে অবস্থিত । এই যোগমায়াই রাধাকৃষ্ণ-লীলার ঘটনকত্রী কিন্তু লীলাময়ী শ্ৰীমতী রাধিকার এমনি প্ৰাদুৰ্ভাব যে কেহই যোগমায়াকে দর্শন করিতে ব্যাকুল হন না। কিয়দার সিঁড়ি দিয়া নিম্নাভিমুখে অবতরণ করিলে একটী অন্ধকার প্রকোষ্ঠ মধ্যে একখানা চৌকি, এক জোড়া খড়ম ও একটী ত্ৰিশূল দেখিতে পাওয়া যায়। ইহা যে কোন মহাপুরুষের তাহারা জানিতে পারিলাম না । বৃন্দাবনের সমস্ত দেবমন্দিরাদি দৰ্শন করিবার সাধ্য কোনও তীর্থযাত্রীর বা ভ্ৰমণকারীর সাধ্যাতীত ; কারণ সময়, সামৰ্থ্য ও সঙ্গতিতে কুলায় না। প্ৰধান প্ৰধানগুলি দেখিতে গেলেই আট-দশ দিন সময় লাগে। আমরা আবার ততদিনও অপেক্ষা করিতে পারি নাই। তবে একটা বিষয়ে আমরা যাহা লক্ষ্য করিয়াছি এবং যাহা অনুসন্ধানে জানিয়াছি, তাহা আমাদের নিকট পরমাদ্ভূত বলিয়া মনে হইল। বৃন্দাবনের প্রধান দেবালয়গুলি সমস্তই বাঙ্গালী বৈষ্ণবের সেবিত, এমন কি বৃন্দাবনের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা যিনি সেই গোবিন্দজীও বাঙ্গালী বৈষ্ণবের আবিষ্কৃত এবং সেবিত। কোন দেবালয়ে ব্ৰজবাসীদিগের অধিকারিত্ব বা স্বামীত্ব নাই। চৈতন্য মহাপ্ৰভুর পার্ষদগণের \OOR যোগমায়া ।