পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতত-ভ্ৰমণ বৌদ্ধ যাজক এবং প্রায় একশতের উপর হিন্দু দেবমন্দির বিদ্যমান ছিল। চীনপরিব্রাজকদের বর্ণনা হইতে আমরা আরও জানিতে পারি যে সে সময়ে থানেশ্বরের চতুর্দিকস্থ প্ৰায় ১৬ ক্রোশ স্থান (২০০ দুই শত লি) ধৰ্ম্মক্ষেত্র নামে অভিহিত হইত। তখনও এই স্থানে কুরুক্ষেত্রের ভীষণ যুদ্ধে হত বীরগণের অস্থি সমুদয় বিদ্যমান ছিল। . . r ১১৯২ খ্ৰীষ্টাব্দে জয়চাঁদের সহায়তায় দিল্লীশ্বর হিন্দুর গৌরব-রবি - পৃথ্বীরাজের সর্বনাশ সাধিত হয়—তাহার পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুরুক্ষেত্র ও পুণ্যসলিলা সরস্বতীর তাঁটবন্তী ভূভাগ সমূহ মুসলমান নরপতির করতলগত হইল । মুসলমান আধিপত্যের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার বহু তীর্থ লুপ্ত হইয়া যায়। এত অত্যাচার, এত উৎপীড়ন সহ্য করিয়াও কিন্তু হিন্দুতীর্থ যাত্ৰিগণ এখানে ধৰ্ম্মকাৰ্য্যাৰ্থ আগমন করিতেন। তারিখ-ই-দাউন্দী নামক একখানা মুসলমান ইতিহাস পাঠে জানিতে পারা যায় যে একবার এস্থানে বহু তীর্থযাত্রী স্নানার্থ কুরুক্ষেত্রে সমবেত হইলে, সম্রাট সিকান্দর লোদী তাহাদের সকলকে বিনাশ করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন—সৌভাগ্যের বিষয় তাহার সে সঙ্কল্প কাৰ্য্যে পরিণত হয় নাই । নিরীহ ধৰ্ম্মলাভেচ্ছ যাত্ৰিগণের প্রাণবধ করিবার প্রবৃত্তিও র্যাহাঁদের হৃদয়ে জাগিয়া ওঠেতাহাদিগকে মনুষ্যাকারে পশু বলিলে কোন অপরাধ করা হয় না । শিখদিগের অভু্যত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার প্রাচীন তীর্থও ধ্বংসাবশিষ্ট দেবমন্দিরাদি মুসলমানের কবল হইতে উদ্ধার পাইয়াছিল। সেই সময় হইতে পুনরায় লক্ষ লক্ষ হিন্দু নরনারী নিৰ্ভয়ে এই তীর্থে আগমন করিতে আরম্ভ করিয়াছেন । বৰ্ত্তমান সময়েও বহু সহস্ৰ তীর্থযাত্ৰিগণ এই স্থানে আগমন করেন। পাণ্ডাদের গৃহে কিংবা সহরে বাসা করিয়াই ভঁাহারা তীৰ্থকৃত্য সমাধা করেন। আহাৰ্য্য পশ্চিমের অন্যান্য স্থানের মত এখানেও মিলে। কুরুক্ষেত্র হইতে ফিরিবার পথে মনে হইল -- জগতে ধৰ্ম্মের জয় অবশ্যম্ভাবী, আজ হউক।--কাল হউক একদিন না একদিন— ধৰ্ম্মের অভু্যুত্থান হইবেই হইবে। পৃথ্বীরাজের বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ দেখিয়া নয়নজল সংবরণ করিতে পারি নাই। এই থানেশ্বর ক্ষেত্রেই ভারতের সৰ্বনাশ সাধিত হয়, এই রণক্ষেত্রেই শেষ স্বাধীন হিন্দুনরপতি পৃথ্বীরাজ