পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vetav-eate এই খানেই সমাধিলাভ করেন। তঁহার সময়েই রাজা বিক্রমাদিত্য এই দুৰ্গনিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। অনেকে বলেন তৎপরে দিল্লীপতি পৃথ্বীরাজ এই দুর্গে বাস করিতেন। এই সকল শুনিতে শুনিতে আমরা দুৰ্গমধ্যে প্রবেশ করিলাম। দেখিলাম তোরণদ্বারে স্থানে স্থানে প্রস্তরখণ্ড খসিয়া গিয়াছে। শুনিলাম উহা মুসলমানদিগের আক্রমণের ফল। ভিতরে গিয়া দেখিলাম দুর্গের মধ্যে অতি প্ৰাচীনকালের মধ্যযুগের এবং এখনকার কালের প্রস্তরময় সৌধমালা ও ‘বাঙ্গালা’ ঘর আছে। দুর্গের দৈর্ঘ্য উত্তর দক্ষিণে যত, প্রস্থে তাহার সিকি এবং পদাঙ্কের চতুষ্পার্শ্বে যে প্রাচীর তাহার দৈর্ঘ্যতা ২৪০০ গজ হইবে । দুৰ্গসৌধগুলির অধিকাংশ মুসলমানদিগের সময়ে নিৰ্ম্মিত। হিন্দুসৌধাদি যাহা ছিল তাহাই অধিকাংশ ভাঙিয়া-চুরিয়া সেই উপকরণে এই সকল অট্টালিকা গঠিত। হিন্দু দেবদেবীর মূৰ্ত্তিবিশিষ্ট ও লতাপাতার নকসাবিশিষ্ট প্ৰস্তরখণ্ডাদি এই সকল অট্টালিকার ভিত্তিতে ও প্রাচীরগাত্ৰে দেখিতে পাওয়া যায়। দেবমূৰ্ত্তির অধিকাংশই মুসলমানের বিদ্বেষবলে উলটাইয়া গাঁথিয়া গিয়াছে। বৌদ্ধমন্দিরের চিহ্নাদিও এখানে যথেষ্ট আছে। ত্রিশূল, অসি, মৎস্য প্রভৃতি এবং নাগরী ও পালি অক্ষরও এই সকল অট্টালিকার গাত্রে চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যায়। হিন্দুর সৌধাদির চিহ্ন যে একবারে লোপ হইয়াছে তাহা হয় নাই । শুনা গেল প্ৰায় হাজার বৎসর পূর্বে (১০১৯ খ্ৰীষ্টাব্দে) এখানে সহদেব নামে এক রাজা ছিলেন। অনেকের ধারণা তিনিই এই পদাঙ্ক দুগের নিৰ্ম্মাতা । তঁহার “সোনবা” নামে পরম রূপবতী কন্যা ছিল । রাজা প্ৰতিজ্ঞা করেন, যে রাজপুত্র যুদ্ধে তাহাকে হারাইতে পারিবেন, তিনিই কন্যালাভ করিবেন। বহুদিন পৰ্য্যন্ত তিনি অজেয় ছিলেন, শেষে মহোবার রাজা ওসলের পুত্ৰ ওদল তাহাকে যুদ্ধে পরাজিত করিয়া সোনবার পাণিগ্রহণ করেন। বর্তমান প্রাচীন অট্টালিকার একাংশে রাজকুমারীর গৃহ ও বিবাহের ছায়ামগুপ ছিল বলিয়া নির্দেশও হইয়া থাকে"। ১৪৮৮ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৫২৬ খৃষ্টাব্দের মধ্যে এখানে বীরসিংহ ও বীরভানু নামে দুই রাজা ছিলেন। তঁহাদের নিৰ্ম্মিত মন্দির ও তঁহাদের রাণীদিগের নিৰ্ম্মিত রাণীঘাট ও দেউল এখনও ‘ভৰ্ত্তারি চকুতারার’ (ভর্তৃহরি চত্বর ) নিকট বৰ্ত্তমান আছে। ১৫২৯ \రిJ8