পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । গুম্ফা, হস্তি গুম্ফা, স্বৰ্গপুরী গুস্ফা, জয়া বিজয়া গুম্ফা, বৈকুণ্ঠ ও যমপুরগুম্ফা, সৰ্পগুম্ফা, ব্যাঘ্ৰ গুম্ফা প্ৰভৃতি গুম্ফাগুলি প্ৰধান । । এ সকল গুস্ফার মধ্যে রাণীগুম্ফাই সর্বশ্রেষ্ঠ ও বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য। এই গুস্ফাটি দ্বিতলা। নিম্নাতলে প্ৰায় দ্বাদশটি এবং উপরের তলায় প্রায় একাদশটি প্রকোষ্ঠ আছে। গৃহটি দ্বিতল হইলেও, ইহার রীতিমত একতিলের উপর অপর তল অবস্থিত নহে, নিম্নতলের গৃহগুলি হইতে উচ্চতলের গৃহগুলি পশ্চাতে পৰ্বতের উচ্চ অংশে অবস্থিত বলিয়া দ্বিতলের ন্যায় প্রতীয়মান হয় ; এ নিমিত্তই প্রত্যেক পুরাতত্ত্ববিদগণ ও ভ্ৰমণকারিগণ ইহাকে দ্বিতল বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন । এই গুস্ফার নাম রাণীগুম্ফা কেন হইল, এ সম্বন্ধে একটা জনপ্ৰবাদ প্ৰচলিত আছে । কথিত আছে যে, একজন রাণী বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়া সমুদয় রাজ্যসুখ পরিত্যাগপূর্বক এসকল গুম্ফা নিৰ্ম্মাণ করাইয়া বাস করিয়াছিলেন বলিয়া, ইহা রাণীগুম্ফা নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছে। একটা পৰ্পর্বতগাত্ৰ-খোদিত বিস্তৃত প্রাঙ্গণের তিন দিকে এই গৃহগুলি অবস্থিত। গৃহের সম্মুখে বারাণ্ডা, কতকগুলি স্তম্ভের উপর বিরাজ করিতেছে, গৃহের ছাদ অপেক্ষা বারাণ্ডার ছাদ অনেক উচ্চ । দক্ষিণদিকের ও বামদিকের কক্ষগুলি পাকের কাৰ্য্যের জন্য ও সকলের ভোজনের জন্য ব্যবহৃত বলিয়া মনে হয়। * উপরের তলের গুম্ফাগুলির মধ্যে চারিটি গুস্ফার দৈর্ঘ্য ১৪ ফিট ও প্ৰস্থ ৭ ফিট এবং উচ্চতা তিন ফিট নয় ইঞ্চি । বাহিরের বারাণ্ডা ৬০ × ১০ ফিট এবং ৭ ফিট উচ্চ। প্রত্যেক গৃহে প্ৰবেশ করিবার জন্য দুইটি করিয়া দ্বার আছে--দরজার চৌকাঠগুলি প্ৰস্তর হইতে সুকৌশলে খোদিত করিয়া বাহির করা হইয়াছে। প্রবেশদ্বারের উদ্ধাংশ গোল খিলান দ্বারা শোভিত এবং তাহাতে নানাপ্রকারের মূৰ্ত্তি খোদিত রহিয়াছে। নিম্নতলের দ্বারদেশে দুইটি বৃহৎ প্রস্তরনিৰ্ম্মিত প্রহরীর মূৰ্ত্তি দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাদের উভয়েরই হাটুর উপর। পৰ্য্যন্ত বৰ্ম্মাবৃত, একজনের পায়ে বুট জুতার মত একপ্রকার পদারক্ষিণী, অপরের কেবল পদের নিম্নাংশ অর্থাৎ পায়ের পাতা খালি, কিন্তু উপরাংশে সঁাজোয়া দ্বারা সুশোভিত । রাণীগুম্ফা । 8SR