পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । ইহারা, ধন্য ইহাদের চেষ্টা, ধন্য ইহাদের যত্ন ও অধ্যবসায়। এমন জাতির যদি উন্নতি না হয়, তবে কি তোমার আমার মত পরিশ্রমকাতর বিলাসী বাঙ্গালী বাবুর হইবে ? যাহারা নিজের দেশকে ভালরূপ জানিতে পারিল না, নিজের মায়ের পবিত্রতম সুমিষ্ট দুগ্ধধারা পান করিতে পারিল না ; তাহারা সত্য সত্যই “নিজ বাসভূমে পরবাসী।” সৌভাগ্যের বিষয় বলিতে হইবে যে, আজ কাল অনেকে পুরাতত্ত্বের অমৃতময় রসাস্বাদনে প্ৰবৃত্ত হইয়া মাতৃভাষার কলেবর পুষ্ট করিতেছেন। উদয়গিরির উচ্চতম শিখর প্রদেশের এবং রাণী নুরগুম্ফার উত্তর शूgि९४मा दा পূর্বদিকে গণেশগুম্ফ অবস্থিত! এই গুস্ফার নাম গণেশগুফী। গণেশগুম্ফা কেন হইল বুঝিতে পারা যায় না। ইহার নাম হস্তিগুম্ফ হওয়াই অধিকতর সঙ্গত ছিল, কারণ গুম্মফাভ্যন্তরে গণেশমূৰ্ত্তির পরিবৰ্ত্তে কতকগুলি প্রস্তরময় হস্তিমুণ্ড সংরক্ষিত আছে, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে হস্তিমূৰ্ত্তি থাকায়ই ইহার নাম গণেশগুম্ফা হইয়াছে। গণেশগুম্ফার সম্মুখে একটী বারাণ্ড আছে, বারাণ্ডার ছাদ পাঁচটী স্তম্ভের উপর স্থাপিত, স্তম্ভগুলি প্রায়ই ভগ্ন ; ইহাদের শীর্ষদেশে কতিপয় রমণীমূৰ্ত্তি অঙ্কিত আছে। এই গুম্ফায় আরোহণ করিবার সিড়ির দুই ধারে দুইটি প্ৰকাণ্ড হস্তীর মূৰ্ত্তি ; উভয়েরই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভগ্ন, ইহারা প্রত্যেকে নিজ নিজ শুণ্ড দ্বারা এক একটি নাব্লসমেত বিকশিত শতদল ধারণ করিয়া রহিয়াছে। এই গুস্ফার শীর্ষদেশে একটী রমণী-হরণের ধারাবাহিক চিত্র অতিশয় সুন্দরীরূপে খোদিত রহিয়াছে। এ সম্বন্ধে নানা মুনির নানা মত । রাণীগুম্ফার চিত্রের সহিত ইহার বহু সোসাদৃশ্য বিদ্যমান। স্থানীয় জনসাধারণে ইহা রাবণ কর্তৃক সীতাহরণ বলিয়া বিশ্বাস করে ; কিন্তু প্রত্নতত্ত্ববিদগণ ইহা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন ; অস্বীকার করিবার যথেষ্ট কারণও আছে, রামায়ণের বর্ণিত সীতাহরণের সহিত কোনও সৌসাদৃশ্যই বিদ্যমান নাই। কোথায় বা জটায়ু, কোথায় বা দশস্কন্ধ রাবণ, কোথায় বা পুষ্পক রথ। মূল ঘটনা সম্বন্ধে কেহই কোনওরূপ সিদ্ধান্ত করিতে পারেন নাই, তবে কল্পনার অবাধ গতিতে অপূর্ব কাহিনীর ছবি অনেকেই আঁকিয়াছেন, কিন্তু ইতিহাসের কঠোর সত্যের সম্মুখে সে সকল 888