পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খগুগিরি ও উদয়গিরি । একটা অতি প্ৰাচীন শিলালিপির নিমিত্তই এই গুম্ফা বিশেষ বিখ্যাত। gagre sea এই গুম্ফায় কোনরূপ শিল্পচাতুর্য্য বিদ্যমান নাই, কেবল খোদিত লিপি। তিনটি কক্ষ এবং গৃহের সমক্ষে একটা বারাণ্ড আছে। এই গুস্ফার নিকট হইতে বহুদূর পর্য্যন্ত দৃষ্টি চলে—অতি দূরে দূরে দুই একটা অনুচ্চ গিরিশৃঙ্গ, আর কেবল সুবিস্তৃত বনরাজিনীলা কাননকুন্তলা ধরণী সুন্দরীর উচ্ছ স্থল স্তরে স্তরে বিভক্ত সুষমাসম্পদ। বৰ্ত্তমান সময়ে। শিলালিপির অক্ষরগুলি অধিকাংশ স্থলেই অস্পষ্ট এবং কোন কোন স্থান একেবারেই নষ্ট হইয়া গিয়াছে। লেফটেন্যাণ্ট কিটাে সাহেব ১৮৩৭ খ্ৰীষ্টাব্দে ইহার একটী প্ৰতিলিপি গ্ৰহণ করিয়াছিলেন, সেজন্য ইহার প্ৰাচীনত্ব ইতিহাসজ্ঞ পাঠকবগের অবিদিত নাই । এই লিপি পাঠে জানিতে পারা যায় যে, কলিঙ্গদেশে ক্ষমতাবান ঐর নামক একজন নরপতি ছিলেন ; তিনি অত্যন্ত দানশীল ছিলেন ; বারাণসীতে তিনি বহু স্বর্ণ বিতরণ করিয়াছিলেন ; তাহার সৈন্য, অশ্ব, গো, মেষ মহিষাদি অসংখ্য ছিল এবং সর্বদা তাহাদিগের দ্বারাই বেষ্টিত থাকিতেন। তাহার বাহন। এক অতি বৃহদাকারের হস্তীর নাম ছিল “মহামেঘ।” ইনি কলিঙ্গরাজ্য জয় করিয়া, নূতন রাজধানী স্থাপনান্তর রাজত্বের ত্ৰয়োদশবর্ষ সময়ে পৰ্বত নামক জনৈক নৃপতির কন্যার পাণিগ্রহণ করেন। ইনি মগধের নরপতি নন্দ রাজকে রণে পরাজিত করিয়া, সেখানে নূতন রাজবংশ স্থাপন করেন ও ধৰ্ম্মমণ্ডলীর নিমিত্ত ভূমধ্যে স্তম্ভশোভিত চৈত্য ও সুড়ঙ্গ নিৰ্ম্মাণ করেন। এই মহানুভব নরপতি কর্তৃকই হস্তিগুম্ফা প্রস্তুত হইয়াছিল । রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র এই খোদিত লিপি হইতে অনুমান করিয়াছেন যে, এই হস্তিগুম্ফা খৃষ্টের জন্মের প্রায় ৩১৬ হইতে ২১৬ বৎসরের মধ্যে ঐর নৃপতি রাজত্ব করেন এবং তঁাহার সময়ে নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। কাহারও কাহারও মতে ইহা অপেক্ষা প্ৰাচীন গুম্ফা পৃথিবীর আর কোথাও नांश् । এই গুস্ফার পার্শ্বে ব্যাঘ্রগুম্ফা ও সর্পগুম্ফা নামক দুইটী ক্ষুদ্র গুম্ফা, দেখিতে বেশ সুন্দর। ব্যাস্ত্ৰগুম্ফাটি দেখিলে মনে হয়, যেন একটি ব্যাস্ত্ৰ মুখব্যাদান করিয়া রহিয়াছে। এই বৃহৎ ব্যাঘ্ৰমুণ্ডের নাসিকা, দন্তপাটি, চক্ষু অতি সুন্দর ও স্বাভাবিক ভাবে ব্যাস্ত্ৰগুম্ফা ও সৰ্পগুম্ফা । ৬৩ ৷ 8s.