পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলেন যে, “আমি সমস্ত শাস্ত্ৰকে আমৱাক্ষরূপে রাখিয়া লিঙ্গরূপে একাম্রনাথ নামে অভিহিত হইয়া এ স্থানে বাস করিতেছি । কাঞ্চীতে বাস করিলে মানুষ সর্ব পাপ হইতে বিমুক্ত হয়। প্রলয়েও এই নগরীর বিনাশ নাই, আমি সে সময়ে ইহাকে ত্ৰিশূলে রক্ষা করিব।” দাক্ষিণাতোর লোকেরা এ স্থানে মৃত্যু হইলে মুক্তি হয় বলিয়া বিশ্বাস করে । আৰ্য্যাবৰ্ত্তের লোকেরা যেমন জীবনের শেষভাগে কাশীতে বাস করিয়া থাকে, দাক্ষিণাত্যের লোকেরাও তদ্রুপ কাঞ্চীতে বাস করে। এ স্থানের একাম্রনাথ লিঙ্গ ক্ষিতিমূৰ্ত্তি। তজ্জন্য অন্যান্য দেবালয়ের ন্যায় এ স্থানে জলাভিষেক হয় না । দাক্ষিণাত্যে একাম্রনাথের মন্দির বিশেষ বিখ্যাত। ইহা দেখিতে অত্যন্ত সুন্দর ও পুরাতন । এই মন্দির এক সময়ে একজন রাজা কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হয় নাই ; ক্ৰমে ক্ৰমে পরিবদ্ধিত হইয়া ইহার বিপুল কলেবর সমাপ্ত হইয়াছে। কেহ কেহ অনুমান করেন যে, ইহার মূল মন্দির চােল রাজারা নিৰ্ম্মাণ করেন, এবং গোপুরাম ইত্যাদি পরে বিজয়নগরের রাজা কৃষ্ণদেব রায় নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন । মন্দির প্রাঙ্গণে। একটা প্ৰাচীন সহকার বৃক্ষ বিরাজমান। বৃক্ষটি কত কালের, তাহ নিৰ্ণয় করা দুরূহ। তবে তিন চারি শত বৎসর কিংবা তাহারও অধিক প্রাচীন হইতে পারে। স্থানীয় জন-সাধারণের বিশ্বাস, এই বৃক্ষটি অনন্তকালের সাক্ষী, এবং সর্বশাস্ত্ররূপী। এই সহকার তরুর চারিটি শাখায় মিষ্ট, কটু, তিক্ত ও অম, এই চারি প্রকারে আম্র ফলিয়া থাকে। র্যাহারা এই বৃক্ষের ফল খাইয়াছেন, তঁাহারা ইহার সত্যতা সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়া থাকেন। মন্দিরস্থ পুরোহিতেরা বলেন যে, পূর্বে প্রত্যহ একটী করিয়া সুপক্ক আম্র এই বৃক্ষ হইতে পাওয়া যাইত, এবং তাহাই একাম্রনাথকে ভোগ দেওয়া হইত। এখন আর প্রত্যহ সেরূপ আক্রম পাওয়া যায় না । অনেকে এই হইতেই একাম্রনাথের নামােৎপত্তির সিদ্ধান্ত করেন। একাম্রনাথের মন্দিরের সন্নিহিত কামাক্ষী দেবীর মন্দির একাম্রনাথের মন্দির অপেক্ষা অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র। কামাক্ষীদেবীর মন্দিরোৎপত্তি সম্বন্ধে স্থলপুরাণে লিখিত আছে যে, একদা দেবী ভগবতী কৌতুহলপরবশ হইয়া পশ্চার্দিক হইতে দেবাদিদেব প্ৰাচীন আম্রবৃক্ষ ।