পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৮৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেশ্বরম। করিয়া রামেশ্বরের মন্দির বিরাজিত। এই দেবালয়ের গঠন প্ৰণালী সম্পূর্ণ দ্রাবিড়ী ধরণের। মন্দিরটা উচ্চে ১২০ ফুট হইবে। সিংহদরোজা বা সম্মুখস্থ গপুরামটি ১০০শত ফুট উচ্চ। এই মন্দিরের শিল্পনৈপুণ্য দেখিলে বিস্মিত হইতে হয়। প্ৰাচীন দ্রাবিড়ীয় শিল্পের চরমোৎকৰ্মত এস্থানে দেদীপ্যমান। মন্দিরের স্তম্ভশ্রেণী, গুম্বজ ও খোদিত মূৰ্ত্তি সমূহ দর্শনে হৃদয়ে অপূর্ব আনন্দানুভব করিলাম। এই মন্দিরের নিৰ্ম্মাণ সম্বন্ধে নানা প্রকারের কিংবদন্তী শুনিতে পাওয়া যায়। স্থানীয় জন-প্ৰবাদ এই যে কাণ্ডীর রাজা লঙ্কা দ্বীপ হইতে প্ৰস্তর কাটাইয়া ও তাহ পালিশ করাইয়া এই মন্দির নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। মন্দিরের বহির্ভাগস্থ বিচিত্ৰ চিত্র পরিপূর্ণ শিল্পময় মণ্ডপ দাক্ষিণাত্যের একটা প্ৰধান দ্রষ্টব্য পদার্থ। এই মন্দিরের গঠন প্ৰণালীর একটু বিশেষ বিশেষত্ব এই যে, উহার দরোজা ও চাঁদোয় ৪০ ফুট লম্বা এক এক খানি স্বতন্ত্র প্রস্তর খণ্ডে গ্রথিত এবং অভ্যন্তরস্থ গৃহের চতুর্দিকস্থ স্তন্ত শ্রেণী পরিশোভিত দালান অতীৰ আশ্চৰ্য্য জনক। ছাদ মেজ (Floor) হইতে ৩০ ত্রিশ ফিট উচ্চ স্তম্ভোপরি স্থাপিত এবং প্রতি ২০ ফুট অন্তরে এক একটী স্তম্ভ বিরাজিত। মন্দিরের বহির্ভাগস্থ প্ৰাকার ও বারাণ্ডা এই দেবালয়ের গৌরব বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। ইহা দৈর্ঘ্যে ৭০০ ফুট এবং প্রস্থে ৪০০ ফুট। দৈর্ঘ্যের সমগ্ৰ ভাগই উন্মুক্ত, পরিসরস্থ দিকের স্তম্ভের উপরে ছাদ আছে। বহিঃপ্রাচীরের চতুর্দিকে চারিটী গপুরাম বা প্রবেশের দ্বার আছে, তন্মধ্যে তিনটীই অসমাপ্ত, কেবল পশ্চিম দিকের গপুরামটী পূৰ্ণগঠিত দেহে বিরাজমান। এখানকার মন্দিরস্থ বারাণ্ডার স্তম্ভশ্রেণীর কারুকাৰ্য্য দক্ষিণাত্যের অন্যান্য মন্দিরের স্তম্ভাবলীর শিল্পনৈপুণ্যাপেক্ষা কোন অংশে নিকৃষ্ট নহে। প্ৰতি স্তম্ভেই নানাবিধ দেবদেবী ও প্রাচীন রাজন্যবর্গের মুক্তি খোদিত আছে। গৰ্ভ-গৃহের সন্নিকটে যে বারাণ্ডা আসিয়াছে, তাহার এক দিকে রামনাদের রাজাদিগের মূৰ্ত্তিও খোদিত দেখিলাম। প্রত্নতত্ত্ববিদগণের অনুমানে সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে মাদুরার পেরুমাল নায়ক যখন সুন্দরেশ্বরের মন্দিরের সংস্কার ও আয়তন বৃদ্ধি করিতেছিলেন, A Ve Vo)