পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৯৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইন্দের। . বিশ্রাম করিতেছিলেন এবং গ্রামবাসী লোকজনের সহিত বিবিধ বিষয়ের আলোচনা করিতেছিলেন, সে সময়ে দৈবক্রমে নবমবৰ্ষ বয়স্ক বালিকা তথায় আসিয়া উপস্থিত হইল এবং নিজ গ্রামবাসী আত্মীয় বন্ধু বান্ধবকে দেখিতে পাইয়া ধীরে ধীরে সেস্থানে উপবেশন করিয়া উহাদের কথাবাৰ্ত্তা শুনিতে লাগিল। মহারাষ্ট্রীয় সেনাপতি বালিকাটীর শ্ৰীতিমাখা হাস্যময়ী মুখ ও সুন্দর আকার দেখিয়া উপস্থিত ব্যক্তি-বর্গের নিকট মেয়েটার পরিচয় চাহিল, উত্তরদাতা সবিশেষ উত্তর দিতে দিতে বলিল যে, “অল্প বয়সে এরূপ দয়াবতী, গুণবতী এবং সুশীলা মেয়ে অতি কমই দেখা যায়, ইহার পিতা আনন্দরাও সিন্দে নিজে যেমন ধাৰ্ম্মিক ও দয়াবান কন্যাও তদ্রুপ হইয়াছে, কিন্তু দরিদ্রতা নিবন্ধন উপযুক্ত পাত্রের হস্তে কন্যা সম্প্রদান করিতে পারিতেছে না, এই বালিকার জন্ম-পত্রিকায় লিখিত আছে যে এই বালিকা একদিন রাজরাণী হইবে । বিধাতার লিপি অখণ্ডনীয়। এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই হোলকার রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মলহাররাও হোলকার একমাত্র পুত্র খণ্ডে রাওয়ের সহিত অহল্যার বিবাহ দেওয়াইলেন জ্যোতিষীগণনা সফল হইল। কিন্তু হায় ! অহল্যা রাজা-রাণী হইয়াও সুখী হইলেন না, বিধাতা তাহাকে জগতের যে মহাদুপকার সাধনের জন্য পাঠাইয়াছিলেন, পাছে তাহার অন্তরায় হয় এই জন্যই বুঝি সংসারের সুখ শান্তি হইতে র্তাহাকে দূরে রাখিয়াছিলেন। বিবাহের কয়েক বৎসর পরে অহল্যার অষ্টাদশ বর্ষ বয়সে র্তাহার স্বামী খণ্ডে রাও একটী যুদ্ধে গমন করিয়া প্রাণত্যাগ করেন। স্বামীর এইরূপ মৃত্যুতে স্বামী ভক্তিপরায়ণা অহল্যা পতির জ্বলন্ত চিতায় আত্মবিসৰ্জনই শ্রেয়ঃ বিবেচনা করিয়াছিলেন, কিন্তু পিতৃতুল্য শ্বশুরের সনির্বন্ধ অনুরোধে তাঁহাকে ঐ সঙ্কল্প হইতে বিরত হইতে হইল। মলহার রাও পুত্রবধূ অহল্যার ক্রোড়দেশে মস্তক স্থাপন করিয়া বালকের ন্যায় কঁাদিতে কঁাদিতে বলিয়াছিলেন “মা ! তুমি আমাকে আজ হইতে তোমার সন্তান বলিয়া মনে করিও ; খণ্ডুজী এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে দারুণ শোকানলে জর্জক্তরীভূত করিয়া সংসারের মায়ার বন্ধন ছিড়িয়া পালাইয়াছে, ইহার উপরে আবার তুমিও যদি আমাকে নিরাশ্রয় করিয়া ফেলিয়া যাও, তবে আমি কিরূপে .\9ዓd