পাতা:ভাষা বিজ্ঞান নামক বাঙ্গালা ভাষার ব্যাকরণ.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।



[৮]

সংস্কৃত ও প্রাকৃত।

 ভাষা দুই প্রকারে প্রচলিত থাকে। যে প্রকার পরিশুদ্ধ ভাষা গষ্ঠ পুস্তকে ব্যবহৃত হয় তাহাই সংস্কৃত বা সাধু ভাষা কিন্তু লোকে সংস্কৃত কথায় প্রায় সাধারণ কথাবার্তা কুহে না বরং অনেক শব্দ সহজ ও সংক্ষেপ করিয়া তাহা দ্বারাই কথাবার্তা বলে। এইরূপ কথার নাম প্রাকৃত বা গ্রাম্য ভাষা। ষে সকল দেশের সাধুভাষ এক তাঁহাদের মধ্যেও প্রাকৃত ভাষা সচরাচর বিভিন্ন হইয়া থাকে। 'প্রাকৃত ভাষা নাটক উপন্যাসাদিতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তৎ সম্বন্ধে কোন অভিধান ব। ব্যাকরণ নাই।

পরাকৃত ভাষা।

 কোন জাতির সভ্যতার আরম্ভ হইতেই তাহারা পরামর্শ করিয়া যে ভাষা স্বষ্টি করে তাহার নাম মৌলিক ভাষা বা আদি ভাষা। আর্য্য জাতির আদিম ভাষা • লাটিন ভাষা হিব্রু, আরবী চীন জেন্দ বা প্রাচীন পারস্ত ভাষা। আর যে ভাষা অন্ত এক বা তদধিক ভাষা হইতে উৎপন্ন হয় তাহার নাম পরাকৃত ভাষা। যেমন বাঙ্গালা, হিন্দী, মহারাষ্ট্রী পালি বা মাগধী ভাষা প্রভৃতি ভাষা আদিম আর্য্য ভাষা হইতে উৎপন্ন; বর্তমান পার্সি, তুর্কী পুখতো, উর্দু প্রভৃতি ভাষা আরবী পারস্ত, হিন্দী তুরানী ভাষার সংমিশ্রণে উৎপন্ন; ইংরাজী প্রভৃতি ইউরোপীয় ভাষা লাটন এবং তাতারী ভাষা মিশ্রণে উৎপন্ন এই সকল ভাষাকে পরাকৃত ভাষা বলা যায়। যে ভাষায় মনের ভাব উত্তম রূপে ব্যক্ত করা যায় তাহার নাম উৎকৃষ্ট ভাষা। কিন্তু বহু লোকের মধ্যে ভাষার ঐক্য না থাকিলে ভাষা যত কেন উত্তম না হউক তাহা দ্বারা বিশেষ ফল হয় না এজন্য ভাষার ঐক্য রক্ষা অবশু্য প্রয়োজনীয়। অভিধান, ব্যাকরণ এবং অলঙ্কার এই তিনটি শাস্ত্রের সাহায্যে ভাষার ঐক্য রক্ষণ হয়   * হিন্দুরা সর্ব্ব প্রাচীন জাতি হেতু তাহাদের স্বজাতি স্বধর্ম্ম ও স্বীয় ভাষার কোন বিশেষ নাম এবং লাটিন ভাষাও সংস্কৃত মুলক স্বতরাং তাহাদিগকেও প্রকৃত পক্ষে আদি ভাষা বলা যার না এই পুস্তকে আদি ভাষা বলিলে কেবল আর্য জাতির আদিম ভাব বুঝিতে হইবে।