পাতা:ভিষক্‌-দর্পণ (ঊনবিংশ খণ্ড).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৪ সেলের আভ্যন্তরীণ জীবনী শক্তিরও পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন অমুকুল হইলে জীবনী শক্তির অস্থায়ী বৃদ্ধি,–ও প্রতিকূল হইলে হ্রাস - ও অবরোধ, এমন কি চিরকালের জন্ত বিরামও দেখিতে পাওয়া যাইতে পারে। সেল ফাটিয়া নষ্ট হইলে উহা আর জীবন্ত সেল বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে না—উহা মৃত । লবণাক্ত সঙ্কুচিত সেলটীর গঠন অপেক্ষাকৃত কম পরিবর্তিত হইলেও উহা মৃত । কারণ জীবন্ত সেলের কোন কাৰ্য্যই ইহা দ্বারা সম্পন্ন হইতে পারে না । যদিও আকৃতিগত কোন বৈলক্ষণ্য দৃষ্ট না হইতে পারে, তথাপি সেলের কার্যকরী শক্তি চিরদিনের জন্য অন্তৰ্হিত হইলে মৃত্যু উপস্থিত হয়। বাহ অবস্থার সামান্ত পরিবর্তন হেতু সেলের যে পরিবর্তন উল্লিখিত হইল উছ কেবল ক্ষণকালের জন্ত জীবনী শক্তির আংশিক বিরাম মাত্র । উত্তাপের হ্রাস বৃদ্ধি বশতঃ সেলের যে গতিশীলতার অভাব, উহ কেবল জীবনীশক্তির একাংশের ক্ষণিক বিরাম । এই সেলে পোষণ শক্তি সে সময়েও অক্ষুণ্ণ থাকে ও সেই জন্তই তাপ প্রয়োগ পুনরায় অনুকূল হইলে গতিশীলতা ফিরিয়া আইসে। এই পরিবর্তন মৃত্যু হইতে সম্পূর্ণ বিভিন্ন। কার্য্যকরী শক্তির অবস্থার পরিবর্তন হেতু এই যে আংশিক বিরাম, হ্রাস, বৃদ্ধি বা পরিবর্তনকে পীড়িতাবস্থা বা রোগ বলা যাইতে পারে । অস্বাভাবিক ভাবে যদি শারীরিক কোন ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাহ হইলেও উহা রোগ। স্বাভাবিক ভাবে শারীরিক ক্রিয় গুলি সম্পন্ন হইলেই উছ স্বস্থাবস্থা। মুস্থাৰস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত— ভিষকৃ-দৰ্পণ ৮ [ জুন, ১৯০৯ রোগের যে অপর কোন প্রতিকৃতি আছে ৰলিয়া বোধ হয় না । সাধারণ অপেক্ষ বিভিন্ন, আকৃতিগত বা ক্রিয়াগত পরিবর্তনই রোগ বলিয়া উক্ত হয় । সাধারণ অবস্থায় পুনরাবৰ্ত্তনের নাম রোগমুক্তি। চিরদিনের জন্ত কার্যকরী শক্তির সম্পূর্ণ বিরামই মৃত্যু । সেলের জীবনী শক্তির হ্রাস ও বিরাম বাহ ও আভ্যন্তরীণ উভয় অবস্থার উপরই নির্ভর করে । কোন সেলই চিত্নস্থায়ী নহে। একটী মাত্র সেল হইতে জীবাণু বা উদ্ভিজ্জাণু কেবল মাত্র বিভক্ত হইয়া সংখ্যায় বাড়িতে পারে ও তজ্জন্ত উহার জীবনী শক্তি বহুকাল ব্যাপিয়া থাকে। অবশেষে ইহারাও মরিয়া যায় । জীবনী শক্তি সমভাবে সমস্ত অংশে সঞ্চারিত হইতে পারে না । সুতরাং যে সমস্ত অংশে কম জীবনী শক্তি সঞ্চারিত হয় উহা প্রতিকূল অবস্থা সহ করিতে না পারিয়া শীঘ্র নষ্ট হয়। এক সেল বিশিষ্ট জীব হইতে বহু সেলযুক্ত জীবের প্রভেদ এই যে, ইহাদের সেল সমূহে কাৰ্য্যকরী শক্তির বিভাগ দেখা যায় এবং এই অল্পাধিক শ্রম বিভাগ হেতু একজাতীয় সেল অপর জাতীয় সেল অপেক্ষা শীঘ্রই নষ্ট ङ्ग्रु | একটা সেল কতদিন পর্য্যন্ত জীবিত থাকিতে পারে, জানিবার সাধারণ উপায় বিদিত নাই। পুৰ্ব্বতন সেল হইতে উৎপন্ন পরবর্তী সেল সমূহে যে শক্তি সঞ্চারিত হয়, তাহার উপর ইহা অনেকটা নির্ভর করে। সাধারণতঃ এই পৰ্য্যস্ত বলা যাইতে পারে—যে সেল যত অধিকতর উন্নীত উহার শক্তিও তত বিশিষ্ট ভাবাপন্ন ।