পাতা:ভিষক্‌-দর্পণ (ঊনবিংশ খণ্ড).pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জুলাই, ১৯০৯ ] ভারতীয় ভিষক মহামণ্ডলী । ૨ઉ છે উঠাইয়া নাসিকে স্থাপন করিবার সঙ্কল্প কেহ কেহ করিয়াছিলেন । নাসিক দর্শনে আমার অনেকটা শিক্ষা হইয়াছিল । রাত্রি ১॥• টার সময় আমরা আবার গাড়িতে উঠিয়া বম্বে অভিমুখে যাত্রা করিলাম। বম্বে পৌছিতে আর ১১৭ মাইল আছে । সমুদয় দিন পরিশ্রম করে ক্লাস্ত হয়ে গাড়িতে শুইয়া পড়িলাম । গাড়িতে বড় ভিড় । কীষণবেকারের সহিত ছাড়াছড়ি হইলাম। আমি সাহেবী কামরায় উঠিলাম ; এমনি নিদ্রা আসিল, আর কিছু দেখিবার অবসর হইল না । একেবারে ঘাট পার হইয়া কোলিয়ানে উপস্থিত হইলাম ; তখন রাত্রে আর ঘাট দেখা হইল না ; ফিরিবার সময় দেখিলাম, তখন রাত্র ভাল করিয়া দেখা হয় নাই । কোলিয়ান হইতে পুনা যাইবার রেলপথ, পুনা দেখিবার বড় ইচ্ছা ছিল—তাহা হইল না। অতি প্রাতে তখন নিশার অন্ধকার আছে ; ভারত ছাড়িয়া বম্বের দ্বীপে উপস্থিত হইলাম। বম্বে একটা নয়, কতকগুলি দ্বীপ ; পরস্পরের সহিত এবং ভারতবর্ষের সহিত কৃত্রিম বন্ধনে বদ্ধ। ঘাট হইতে নামিয়া দেখি ভূচিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতি ধারণ করিয়াছে ; তার সে কাকর, পাথর নাই, সরস পলিমাটি, অবশু উৰ্ব্বর হবে, কিন্তু রেল রাস্তার ধারে তাহার কিছু বেশী পরিচয় পাইলাম না । প্রথম চোখ পড়িল বঁাকা বাক, রোগা রোগ, না বড়, না ছোট নারিকেল গাছের মতন গাছ ; স্থানে স্থানে দেবালয়, আর সেই দেশ প্রসিদ্ধ চওল । চার পাচতলা উচ্চ উচ্চ ধাড়ী ; ঠিক যেন ৩াসের ঘর ; ভিতরে যে কত ঘর আছে তার ঠিক নাই ; বিশেষ কোন ঐ নাই ; তবে মহানৰ । আছে । এটা বন্ধের উপস্থল, কলকারখানার স্থান, মাটী কাটা ছেড়া, কয়লায় কাল হয়ে গিয়েছে, রাশি রাশি আবর্জনা ; পরিষ্কার পরিচ্ছন্নত কাকে বলে, তা যেন এরা জানে না । দ্বীপে মাইল অন্তর এক একটা ষ্টেসন, দশ মাইলের মধ্যে ১.টা ষ্টেসন দেখিলাম ; অবশু ডাক আদি দূরগামী গাড়ি এসকল ষ্টেসনে থামে না। আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারী রবিবার ; বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া ষ্টেসনে স্বৰ্য্য উঠিবার পূৰ্ব্বে উপস্থিত হইলাম ; তখন ভাল করিয়া দেখিতে পারি নাই, পরে দেখি লাম প্রকাও প্রশস্ত রোয়াক, একের পর এক সমান্তরাল ভাবে অনেক রোয়াক ; অনেক উচ্চ ঢেউ খেলান লোহার ছাদ, বুঝিলাম আমাদিগের নূতন হাওড়া ষ্টেসন এই আদর্শে গঠিত হয়েছে। এই প্রসিদ্ধ ষ্টেসনের খ্যাতি বহিদৃষ্ঠে বলে বোধ হইল ; নানা কাজ করা, মহা উচ্চ, মহালম্বা ; কিন্তু এই ষ্টেসনের এত যে খ্যাতি কেন—বুঝিবার অবসর বোধ হয় আমি পাইলাম না । এ পর্য্যন্ত জব্বলপুর ষ্টেসন ছাড়া কোন স্থানে বাঙ্গালি দেখি নাই । বাঙ্গালা কথা কহিবার অবসর পাই নাই ; একটা বাঙ্গল কথা শুনিও নাই, দুইদিন মাতৃভাষা হারা হয়েছিলাম ; কিন্তু এই সাত শত ক্রোশ দুরে, ভারতের অপর প্রান্তে সে হারাধন আবার পাব তা স্বপ্নেও ভাবি নাই কিন্তু এই ষ্টেসনে নামিয়াই ঠাকুর মশয় ঠাকুর মশয় ধ্বনি কাণে প্রবেশ করিল! চাহিয়া দেখি —এক উৰ্দ্ধমুখি লোলচৰ্ম্ম, অৰ্দ্ধনগ্না, উডিডন বাসা এক অৰ্দ্ধবয়স্ক স্ত্রী ছুটিতেছে ; ভাষা শুনেও যদি আমার মনে কিছু সন্দেহ থাক সম্ভব ছিল, ঝির ঝিরে পাতলা, তেল ধূলা