বেলার নিকট হইতে অবগত হইলাম, তাহার ঐ বাড়ীতে চন্দ্রমুখী নাম্নী অপর আর একটা বেশ্যা অনেক দিবস হইতে বাস করিত। বেশ্যাবৃত্তি করিয়া সেও কতকগুলি তৈজসপত্র ও অলঙ্কারের সংস্থান করিয়াছিল। সে অতিশয় চতুরা ছিল, সহজে সে কাহাকেও বিশ্বাস করিত না, ও অপরের পরামর্শমত সে কখনই চলিত না, নিজে যাহা বুঝিত, ভাল হউক বা মন্দ হউক, সে তাহাই করিত। এরূপও দেখা গিয়াছে যে, তাহার ঘরে যাহাদিগের যাতায়াত ছিল, তাহাদিগের মধ্যে কেহ কেহ উহার নিকট হইতে সময় সময় দুই একখানি অলঙ্কার হস্তগত করিবার চেষ্টা করিয়াছিল, কিন্তু কৃতকার্য্য হইতে পারে নাই। চন্দ্রমুখিকে তাহারা যেরূপ ভাবে বুঝাইবার চেষ্টা করিত, সে কিন্তু সেরূপ ভাবে বুঝিত না বা কাহার কথায় সে কখন বিশ্বাস করিত না। যত দিবস পর্য্যন্ত সে এই বাটীতে বাস করিয়া ছিল, অপর কোন স্থানে রাত্রি যাপন তাহার মধ্যে তাহাকে বাগান বা করিতে কেহ কখন দেখেন নাই, কিন্তু আজ কয়েক দিবস পর্য্যন্ত দেখা যাইতেছে যে, উহার ঘর তালাবদ্ধ রহিয়াছে, ও সে যে কোথায় গমন করিয়াছে, তাহার কিছুই জানিতে পারা যাইতেছে না।
বেলার নিকট হইতে এই কয়েকটা কথা জানিতে পারিয়া তাহাকে কহিলাম, চন্দ্রমুখী সম্বন্ধে অনেক কথা জিজ্ঞাস্য আছে, কিন্তু সে সমস্ত কথা জিজ্ঞাসা করিবার পূর্ব্বে একটা কথা আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, তুমি ফটোগ্রাফ দেখিয়া চিনিতে পারিবে কি উহা চন্দ্রমুখীর ফটোগ্রাফ কি না?
বেলা। ফটোগ্রাফ দেখিয়া বোধ হয় আমি বলিতে পারিব যে, উহা চন্দ্রমুখির ফটোগ্রাফ কি না।