পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
১০৫

প্রাণরক্ষা হয়, আমি কি পর্য্যন্ত আহ্লাদিত হই, বলিতে পারি না। তুমি তোমার আত্মীয়কে জিজ্ঞাসা কর, তিনি তোমায় প্রাণরক্ষার্থে, এই মুহূর্ভে পাঁচ সহস্র টাকা দিতে প্রস্তুত আছেন কি না। তখন সোমদত্ত চিরঞ্জীবকে জিজ্ঞাসা করিলেন, কেমন গো, বাবা! তোমার নাম চিরঞ্জীব ও তোমার পরিচারকের নাম কিঙ্কর বটে। বধ্যবেশধারী অপরিচিত বৈদেশিক ব্যক্তি অকস্মাৎ এরূপ প্রশ্ন করিলেন, কেন, ইহার মর্ম্ম বুঝিতে না পারিয়া, চিরঞ্জীব একদৃষ্টিতে তাঁহাকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। তখন সোমদত্ত কহিলেন, তুমি নিতান্ত অপরিচিতের ন্যায় আমায় নিরীক্ষণ করিতেছ কেন; তুমি ত আমায় বিলক্ষণ জান। চিরঞ্জীব কহিলেন, না মহাশয়! আমি আপনারে চিনিতে পারিতেছি না, এবং ইহার পূর্ব্বে কখনও আপনাকে দেখিয়াছি, এরূপ মনে হইতেছে না। সোমদত্ত কহিলেন, তোমার সঙ্গে শেষ দেখার পর, শোকে ও দুর্ভাবনায় আমার আকৃতির এত পরিবর্ত্ত হইয়াছে যে আমায় চিনিতে পারা সম্ভব নহে; কিন্তু তুমি কি আমার স্বর চিনিতে পারিতেছ না। চিরঞ্জীব কহিলেন, না মহাশয়! আমি আর কখনও আপনকার স্বর শুনি নাই। তখন সোমদত্ত কিঙ্করকে জিজ্ঞাসিলেন, কেমন কিঙ্কর! তুমিও কি আমায় চিনিতে পারিতেছ না। কিঙ্কর কহিল, যদি আমার কথায় বিশ্বাস করেন, তবে বলি, আমি আপনারে চিনিতে পারিতেছি না। অনন্তর, সোমদত্ত চিরঞ্জীবকে কহিলেন, আমার নিশ্চিত বোধ হইতেছে, তুমি আমায় চিনিতে পারিয়াছ।