পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
১১১

অংশে সম্পূর্ণরূপে সংশয় নিরাকরণ হইল। লাবণ্যময়ীর উপাখ্যান দ্বারা তোমার বর্ণিত বৃত্তান্তের সম্পূর্ণ সমর্থন হইতেছে। এখন আমি স্পষ্ট বুঝিতে পারিলাম, দুই চিরঞ্জীব তোমাদের যমজ সন্তান; দুই কিঙ্কর তোমাদের ক্রীত দাস। আমাদের চিরঞ্জীব, অতি শৈশব অবস্থায়, তোমাদের সহিত বিয়োজিত হইয়াছিলেন, এজন্য তোমায় চিনিতে পারেন নাই। যাহা হউক, মনুষ্যের ভাগ্যের কথা কিছুই বলতে পারা যায় না। তুমি যাহাদের অদর্শনে এত কাল জীবন্মৃত হইয়া ছিলে, এক কালে সেই সকলগুলির সহিত অসম্ভাবিত সমাগম হইল। তুমি এত দিন আপনাকে অতি হতভাগ্য জ্ঞান করিতে; কিন্তু এক্ষণে দৃষ্ট হইতেছে, তোমার তুল্য সৌভাগ্যশালী পুরুষ অতি বিরল। শেষ দশায়, তোমার অদৃষ্টে যে এরূপ সুখ ও এরূপ সৌভাগ্য ঘটিবেক, ইহা স্বপ্নের অগোচর।

 সোমদত্তকে এইরূপ কহিয়া, হেমকূটবাসী চিরঞ্জীবকে জয়স্থলবাসী জ্ঞান করিয়া, অধিরাজ জিজ্ঞাসা করিলেন, কেমন চিরঞ্জীব! তুমি প্রথম কর্ণপুর হইতে আসিয়াছিলে। তিনি কহিলেন, না মহারাজ! আমি নই; আমি হেমকূট হইতে আসিয়াছি। এই কথা শুনিয়া, অধিরাজ সস্মিত বদনে কহিলেন, হাঁ, বুবিলাম, তুমি আমাদের চিরঞ্জীব নও; তুমি এই দিকে স্বতন্ত্র দাঁড়াও; তোমাদের কে কোন ব্যক্তি, চিনা ভার। তখন জয়স্থলবাসী চিরঞ্জীব কহিলেন, মহারাজ! আমি কর্ণপুর হইতে আসিয়াছিলাম; আপনকার পিতৃব্য বিখ্যাত বীর বিজয়বর্ম্মা আমায় সঙ্গে আনিয়াছিলেন।