পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৩

পরিচারক সমভিব্যাহারে, সে তাহাদের উদ্দেশার্থে প্রস্থান করিল। পুত্ত্রটি, অন্ধের যষ্টিস্বরূপ, আমার জীবনের একমাত্র অবলম্বন ছিল; এজন্য তাহাকে ছাড়িয়া দিতে কোনও মতে ইচ্ছা ছিল না। তৎকালে এই আশঙ্কা হইতে লাগিল, এ জন্মে যে গৃহিণী ও জ্যেষ্ঠ পুত্ত্রের সহিত সমাগম হইবেক, তাহার আর প্রত্যাশা নাই; আমার যেরূপ অদৃষ্ট, হয় ত এই অবধি ইহাকেও হারাইলাম। মহারাজ! ভাগ্যক্রমে আমার তাহাই ঘটিয়া উঠিল। দুই বৎসর অতীত হইল, তথাপি কনিষ্ঠ পুত্ত্র প্রত্যাগমন করিল না। আমি তাহার অন্বেষণে নির্গত হইলাম; পাঁচ বৎসর কাল অবিশ্রান্ত পর্য্যটন করিলাম, কিন্তু, কোনও স্থানেই কিছুমাত্র সন্ধান পাইলাম না। পরিশেষে, নিতান্ত নিরাশ্বাস হইয়া, হেমকূট অভিমুখে গমন করিতেছিলাম; জয়স্থলের উপকল দর্শন করিয়া মনে ভাবিলাম, এত দেশ পর্য্যটন করিলাম, এই স্থানটি অবশিষ্ট থাকে কেন। এখানে যে তাহাকে দেখিতে পাইব, তাহার কিছুমাত্র আশ্বাস ছিল না; কিন্তু না দেখিয়া চলিয়া যাইতেও, কোনও মতে, ইচ্ছা হইল না। এইরূপে জয়স্থলে উপস্থিত হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ পরেই ধৃত ও মহারাজের সম্মুখে আনীত হইয়াছি। মহারাজ! তাজ সায়ংকালে আমার সকল ক্লেশের অবসান হইবেক। যদি, প্রেয়লী ও তনয়েরা জীবিত আছে, ইহা শুনিয়া মরিতে পারি, তাহা হইলে আর আমার কোনও ক্ষোভ থাকে না।

 এই হৃদয়বিদারণ আখ্যান শ্রবণে নিবতিশয় দুঃখিত হইয়া