পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
ভ্রান্তিবিলাস।

বিজয়বল্লভ কহিলেন, সোমদত্ত! আমার বোধ হয়, তোমার মত হতভাগ্য ভূমণ্ডলে আর নাই। অবিচ্ছিন্ন ক্লেশভোগে কালহরণ করিবার নিমিত্তই, তুমি জন্ম পরিগ্রহ করিয়াছিলে। তোমার বৃত্তান্ত আদ্যোপান্ত শ্রবণ করিয়া, আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইতেছে। যদি ব্যবস্থাপিত বিধির উল্লঙ্ঘন না হইত, তাহা হইলে, আমি তোমার প্রাণ রক্ষার নিমিত্ত প্রাণপণে যত্ন করিতাম। জয়স্থলের প্রচলিত বিধি অনুসারে তোমার প্রাণদণ্ডের ব্যবস্থা হইয়াছে; যদি, অনুকম্পাব বশবর্ত্তী হইয়া, ঐ ব্যবস্থা রহিত করি, তাহা হইলে, আমি, চিরকালের জন্য, জয়স্থলসমাজে যাব পর নাই হেয় ও অশ্রদ্ধেয় হইব। তবে, আমার যে পর্য্যন্ত ক্ষমতা আছে, তাহা করিতেছি। তোমাকে সায়ংকাল পর্য্যন্ত সময় দিতেছি, এই সময়ের মধ্যে যদি কোনও রূপে, পাঁচ সহস্র মুদ্রা সংগ্রহ করিতে পার, তোমার প্রাণ রক্ষণ হইবেক, নতুবা তোমার প্রাণদণ্ড অপরিহার্য্য। অনন্তর, তিনি কারাধ্যক্ষকে কহিলেন, তুমি সোমদত্তকে যথাস্থানে সাবধানে রাখ। কারাধ্যক্ষ, যে আজ্ঞা মহারাজ! বলিয়া, সোমদত্ত সমভিব্যাহারে প্রস্থান করিল।

 কর্ণপুরের লোকেরা কুবলয়পুরের অধিপতি মহাবল পরাক্রান্ত বিখ্যাত বীর বিজয়বর্ম্মাব নিকট চিরঞ্জীব ও কিঙ্করকে বিক্রয় করে। তৎপরে কিয়ৎকাল অতীত হইলে, বিজয়বর্ম্মা নিজ ভ্রাতৃপুত্ত্র বিজয়বল্লভের সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছিলেন। তিনি চিরঞ্জীব ও কিঙ্করকে এত ভাল বাসিতেন, যে ক্ষণকালের জন্যেও তাহাদিগকে নয়নের অন্তরাল করিতেন না। সুতরাং,