পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৫

 শুনিয়া, সাতিশয় রোষবশী হইয়া, চন্দ্রপ্রভা কহিলেন, স্ত্রীজাতি অপেক্ষা পুরুষজাতির স্বাতন্ত্র্য অধিক হইবেক কেন, আমি তাহা বুঝিতে পারি না, বিবেচনা করিয়া দেখিলে, স্ত্রী পুরুষ উভয় জাতিরই সমান স্বাতন্ত্র্য আছে; সে বিষয়ে ইতরবিশেষ হইবার কোনও কারণ নাই। তিনি আপন ইচ্ছামতে চলিবেন, আমি আপন ইচ্ছামতে চলিতে পারিব না, কেন। বিলাসিনী কহিলেন, কারণ, তাহার ইচ্ছা তোমার ইচ্ছার বন্ধনশৃঙ্খলাস্বরূপ। চন্দ্র প্রভা কহিলেন, গো গর্দভ ব্যতিরিক্ত কে ওরূপ শৃঙ্খলাবন্ধন সহ করিবেক। বিলাসিনী কহিলেন, দিদি! তুমি না বুঝিয়। এরূপ উদ্ধত ভাবে কথা কহিতেছ। স্ত্রীজাতির অসদৃশ স্বাতন্ত্র্য অবলম্বন পরিণামে নিরতিশয় ক্লেশের কারণ হইয়া উঠে। জলে, স্থলে, নভোমণ্ডলে, যেখানে দৃষ্টিপাত কর, স্ত্রী জাতির স্বাতন্ত্র্য দেখিতে পাইবে না; কি জলচর, কি স্থলচর, কি নভশ্চর, জীবমাত্রেই এই নিয়ম অনুসরণ করিয়া চলিয়া থাকে।

 এই সকল কথা শুনিয়া, চন্দ্রপ্রভা কিয়ৎ ক্ষণ মৌনাবলম্বন করিয়। রহিলেন; অনন্তর, সম্মিত বদনে পরিহাসবচনে কহিলেন, এই পরাধীনতার ভয়েই বুঝি তুমি বিবাহ করিতে চাও ন॥ বিলাসিনীও হাস্যমুখে উত্তর দিলেন, হা, ও এক কারণ বটে; তদ্ভিন্ন, বিবাহিত অবস্থায় অন্যবিধ নানা অসুবিধা আছে। চন্দ্র প্রভ কহিলেন, আমার বোধ হয়, তুমি, বিবাহিত হইলে, পুরুষের আধিপত্য ও অত্যাচার অনায়াসে সহ করিতে পারিবে। বিলাসিনী কহিলেন, পুরুষের অভিপ্রায় বুঝিয়া চলা