পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
৩৩

অসন্তোষ বিলক্ষণ প্রকাশ পাইতেছে। যাহারে দেখিলে সুখোদয় হয়, তাহার নিকটে কিছু এ ভাব অবলম্বন কর না। আমি এখন আর সে চন্দ্রপ্রভা নই; তোমার পরিণীতা বনিতাও নই। পূর্ব্বে, আমি কথা কহিলে, তোমার কর্ণে অমৃতবর্ষণ হইত; আমি দৃষ্টিপাত করিলে, তোমার নয়নযুগল প্রীতিরসে পরিপূর্ণ হইত; আমি স্পর্শ করিলে, তোমার সর্ব্ব শরীর পুলকিত হইত; আমি হস্তে করিয়া না দিলে, উপাদেয় আহারসামগ্রীও তোমার সুস্বাদ বোধ হইত না। তখন আমা বই আর জানিতে না। আমি ক্ষণ কাল নয়নের অন্তরাল হইলে, দশ দিক শূন্য দেখিতে। এখন সে সব দিন গত হইয়াছে। কি কারণে এই বিসদৃশ ভাবান্তর উপস্থিত হইল, বল। আমার নিতান্ত তোমাগত প্রাণ; তুমি বই এ সংসারে আমার আর কে আছে। তুমি এত নিদয় হইলে, আমি কেমন করিয়া প্রাণ ধারণ করিব। বিলাসিনীকে জিজ্ঞাসা কর, ইদানীং আমি কেমন মনের সুখে আছি। দুর্ভাবনায় শরীর শীর্ণ হইয়া যাইতেছে। আমি স্পষ্ট দেখিতেছি, আমার উপর তোমার আর সে অনুরাগ নাই। যাহার ভাগ্য ভাল, এখন সে তোমার অনুরাগভাজন হইয়াছে। আমি দেখিয়া শুনিয়া জীবন্মৃত হইয়া আছি। দেখ, আর নিদয় হইও না, আমায় মর্ম্মান্তিক যাতনা দিও না। বিবেচনা কর, কেবল আমিই যে যন্ত্রণা ভোগ করিব, এরূপ নহে; এ সকল কথা ব্যক্ত হইলে, তুমিও ভদ্রসমাজে হেয় হইবে।