পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
ভ্রান্তিবিলাস।

থাকিতে, তুমি কখনও অন্যের হইতে পারিবে না। তুমি দিবাকর, আমি কমলিনী; তুমি শশধর, আমি কুমুদিনী; তুমি জলধর, আমি সৌদামিনী। তুমি পরিত্যাগ করিতে চাহিলেও, আমি তোমায় ছাড়িব না। অতএব, আর কেন, গৃহে চল; কেন অনর্থক লোক হাসাইবে, বল।

 এই সকল কথা শুনিয়া, চিরঞ্জীব মনে মনে কহিতে লাগিলেন, এ কি দায় উপস্থিত! কেহ কখনও এমন বিপদে পড়ে না। এ ত পতিজ্ঞানে আমায় সম্ভাষণ করিতেছে। যেরূপ ভাবভঙ্গী দেখিতেছি, তাহাতে বৈদেশিক লোক পাইয়। পরিহাস করিতেছে, সেরূপও প্রতীতি হইতেছে না। আকার প্রকার দেখিয়া স্পষ্ট বোধ হইতেছে, এ সম্ভ্রান্ত লোকের কন্যা, সামান্যা কামিনী নহে। আমি নিতান্ত অপরিচিত বৈদেশিক ব্যক্তি, আমাকে পতিজ্ঞানে সম্ভাষণ করে কেন। আমি কি নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্ন দেখিতেছি; অথবা, ভূতাবেশ বশতঃ আমার বুদ্ধিভ্রংশ ঘটিয়াছে, তাহাতেই এরূপ দেখিতেছি ও শুনিতেছি। যাহা হউক, কোনও অনির্ণীত হেতু বশতঃ, আমার দর্শনশক্তির ও শ্রবণশক্তির সম্পূর্ণ বৈলক্ষণ্য ঘটিয়াছে, তাহার কিছুমাত্র সংশয় নাই। এখন কি উপায়ে এ দায় হইতে নিষ্কৃতি পাই।

 এই সময়ে বিলাসিনী কিঙ্করকে কহিলেন, তুমি সত্বর বাটীতে গিয়া ভূত্যদিগকে সমস্ত প্রস্তুত করিতে বল, আমরা যাইবামাত্র আহার করিতে বসিব। তখন কিঙ্কর, চিরঞ্জীবের দিকে দৃষ্টিপাত