জয়স্থলবাসী কিঙ্কর, চন্দ্রপ্রভার আদেশ অনুসারে, দ্বিতীয় বার স্বীয় প্রভুর অন্বেষণে নির্গত হইয়া, বসুপ্রিয় স্বর্ণকারের বিপণিতে তাঁহার দর্শন পাইল; এবং কহিল, মহাশয়! এখনও কি আপনকার ক্ষুধা বোধ হয় নাই। সত্বর বাটীতে চলুন; কর্ত্রী ঠাকুরাণী আপনকার জন্য অস্থির হইয়াছেন। আপনি, ইতিপূর্বে সাক্ষাৎকালে, যে সকল কথা বলিয়াছিলেন, এবং অকারণে আমায় যে প্রহার করিয়াছিলেন, আমি সে সমস্ত তাঁহার নিকটে বলিয়াছি। শুনিয়া বিস্ময়াপন্ন হইয়া, জয়স্থলবাসী চিরঞ্জীব কহিলেন, আজ কখন তোমর সঙ্গে দেখা হইল, কখন বা তোমায় কি কথা বলিলাম, এবং কখনই বা তোমায় প্রহার করিলাম। সে যাহা হউক, গৃহিণীর নিকট কি কথা বলিয়াছ, বল। সে কহিল, কেন আপনি বলিয়াছিলেন, আমি কোথায় যাইব, আমার বাটী নাই, আমি বিবাহ করি নাই, আমার স্ত্রী নাই। এই সকল কথা আমি তাঁহার নিকটে বলিয়াছি। তৎপরে, তিনি পুনরায় আমায় আপনার নিকটে পাঠাইলেন; বলিয়া দিলেন, যেরূপে পার, তাঁহাকে সত্বর বাটীতে লইয়া আইস।
শুনিয়া, সাতিশয় কুপিত হইয়া, চিরঞ্জীব কহিলেন, অরে পাপিষ্ঠ! তুমি কোথায় এমন মাতলামি শিখিয়াছ; কতকগুলি কল্পিত কথা শুনাইয়া অকারণে তাঁহার মনে কষ্ট দিয়াছ।