পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৪৩

থাকিবেন; বিশেষতঃ, আপনকার নিমন্ত্রিত এই দুই মহাশয়ের অতিশয় কষ্ট হইতেছে।

 এই সময়ে চন্দ্রপ্রভা অভ্যন্তর হইতে কহিলেন, কিঙ্কর। ওরা সব কে, কি জন্যে দরজায় জমা হইয়া গোলযোগ করিতেছে। হেমকূটবাসী কিঙ্কর কহিল, ঠাকুরাণি! গোলযোগের কথা কেন জিজ্ঞাসা করেন, আপনাদের এই নগরটি উচ্ছৃঙ্খল লোকে পরিপূর্ণ; এখানে গোলযোগের অপ্রতুল কি। চন্দ্রপ্রভার স্বর শুনিতে পাইয়া, জয়স্থলবাসী চিরঞ্জীব কহিলেন, বলি, গিন্নি। আজকার এ কি কাণ্ড। এই কথা শুনিবামাত্র, চন্দ্রপ্রভা কোপে জ্বলিত হইয়া কহিলেন, তুই কোথাকার হতভাগা, দূর হয়ে যা, দরজার কাছে গোল করিস না। লক্ষ্মীছাড়ার আস্পর্দ্ধা দেখ না, রাস্তায় দাঁড়াইয়া আমায় গিন্নি বলিয়া সম্ভাষণ করিতেছে। জয়স্থলবাসী কিঙ্কর কহিল, মহাশয়! বড় লজ্জার কথা, এঁরা দুজন দাঁড়াইয়া রহিলেন, আমরা দরজা খুলাইতে পারিলাম না। যাহাতে শীঘ্র খুলিয়া দেয়, তাহার কোনও উপায় করুন। তখন চিরঞ্জীব কহিলেন, কিঙ্কর! আমি দেখিয়া শুনিয়া এক বারে হতবুদ্ধি হইয়াছি, আজকার কাণ্ড কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। তখন কিঙ্কর কহিল, তবে আর বিলম্বে কাজ নাই, দরজা ভাঙ্গিয়া ফেলুন। চিরঞ্জীব কহিলেন, অতঃপর সেই পরামর্শই ভাল, দরজা ভাঙ্গা বই আর উপায় দেখিতেছি না। যেখানে পাও, সত্বর দুই তিন খান কুঠার লইয়া আইস। কিঙ্কর যে আজ্ঞা বলিয়া তৎক্ষণাৎ প্রস্থান করিল।