এই সময়ে রত্নদত্ত কহিলেন, মহাশয়! ধৈর্য্য অবলম্বন করুন। কোনও ক্রমে দরজা ভাঙ্গা হইবেক না। যাহা দেখিলাম, যাহা শুনিলাম, তাহাতে ক্রোধ সংবরণ করা সহজ নয়। রক্ত মাংসের শরীরে এত সহ্য হয় না। কিন্তু, সংসারী ব্যক্তিকে অনেক বিবেচনা করিয়া কাজ করিতে হয়। এখন আপনি ক্রোধাভরে এক কর্ম্ম করিবেন, কিন্তু ক্রোধশান্তি হইলে, যার পর नाই অনুতাপগ্রস্ত হইবেন। অগ্র পশ্চাৎ না ভাবিয়া কোনও কর্ম্ম করা পরামর্শসিদ্ধ নয়। যদি, এই দিবা দ্বিপ্রহরের সময়, আপনি দ্বারভঙ্গে প্রবৃত্ত হন, রাজপথবাহী সমস্ত লোক, সমবেত হইয়া, কত কুতর্ক উপস্থিত করিবেক। আপনকার কলঙ্ক রাখিবার স্থান থাকিবেক না। মানবজাতি নিরতিশয় কুৎসাপ্রিয়; লোকের কুৎসা করিবার নিমিত্ত, কত অমূলক গল্প কল্পনা করে, এবং কপিত গল্পের আকর্ষণী শক্তি সম্পাদনের নিমিত্ত, উহাতে কত অলঙ্কার যোজনা করিয়া দেয়। যদি কোনও ব্যক্তির প্রশংসা করিবার সহস্ৰ হেতু থাকে, অধিকাংশ লোকে ভুলিয়াও সে দিকে দৃষ্টিপাত করে না; কিন্তু কুৎসা করিবার অণুমাত্র সোপান পাইলে, মনের আমোদে সেই দিকে ধাবমান হয়। আপনি নিতান্ত অমায়িক; মনে ভাবেন, কখনও কাহারও অপকার করেন নাই, সাধ্য অনুসারে সকলের হিতচেষ্টা করিয়া থাকেন; সুতরাং কেহ আপনকার বিপক্ষ ও বিদ্বেষী নাই; সকলেই আপনকার আত্মীয় ও হিতৈষী। কিন্তু আপনকার সে সংস্কার সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক। আপনি প্রাণপণে যাঁহাদের
পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
ভ্রান্তিবিলাস।