পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
.৭৬
ভ্রান্তিবিলাস।

প্রাণপণে ইঁহার পরিচর্য্যা করিতেছি, কিন্তু কখনও প্রহার ভিন্ন অন্য পুরস্কার পাই নাই। শীত বোধ হইলে, প্রহার করিয়া গরম করিয়া দেন; গরম বোধ হইলে, প্রহার করিয়া শীতল করিয়া দেন, নিদ্রাবেশ হইলে, প্রহার করিয়া সজাগর করিয়া দেন; বসিয়া থাকিলে, প্রহার করিয়া উঠাইয়া দেন; কোনও কাজে পাঠাইতে হইলে, প্রহার করিয়া বাটী হইতে বাহির করিয়া দেন; কার্য্য সমাধা করিয়া বাটীতে আসিলে, প্রহার করিয়া আমার সংবৰ্দ্ধনা করেন; কথায় কথায় কান ধরিয়া টানেন, তাহাতেই আমার কান এত লম্বা হইয়াছে। বলিতে কি, মহাশয়। কেহ কখনও এমন গুণের মনিব ও এমন সুখের চাকরি পায় নাই; আমি ইহার আশ্রয়ে পরম সুখে কাল কাটাইতেছি।

 এই সময়ে চিরঞ্জীব দেখিতে পাইলেন, তাঁহার সহধর্ম্মিণী কতকগুলি লোক সঙ্গে লইয়া আসিতেছেন। তখন তিনি কিঙ্করকে কহিলেন, আরে বানর। আর তোমার পাগলামি করিতে হইবেক না। এখন এখান হইতে চলিয়া যাও; আমার গৃহিণী আসিতেছেন। কিঙ্কর, তাহাকে দেখিতে পাইয়া, উচ্চৈঃস্বরে কহিতে লাগিল, মা ঠাকুরাণি। শীঘ্র আসুন; বাবু আজ আপনাকে বিলক্ষণ পুরস্কার দিবেন; হারের পরিবর্ত্তে এক রমণীয় উপহার পাইবেন। এই বলিয়া, হস্তস্থিত রজ্জু উত্তোলিত করিয়া, সে তাঁহাকে দেখাইতে লাগিল। চিরঞ্জীব, ক্রোধে অন্ধ হইয়া, তাহাকে প্রহার করিতে লাগিলেন।

 অপরাজিতার মুখে চিরঞ্জীবের উন্মাদের সংবাদ পাইয়া,