মনস্থ করিয়া আসিয়াছিস। আমি তোর দুরভিসন্ধির সমুচিত প্রতিফল দিতেছি। এই বলিয়া তিনি, কোপজ্বলিত লোচনে, উদ্ধত গমনে চন্দ্রপ্রভার দিকে ধাবমান হইলেন। চন্দ্রাওপ্রভা নিতান্ত ব্যাকুল হইয়া সন্নিহিত লোকদিগকে কহিলেন, তোমরা দাড়াইয়া তামাসা দেখিতেছ, তোমাদের কি আচরণ, বুঝিতে পারিতেছি না; শীঘ্র উহারে বন্ধন কর, আমার নিকটে আসিতে দিও না। তখন চিরঞ্জীব কহিলেন, যেরূপ দেখিতেছি, তুই নিতান্তই আমার প্রাণবধের সঙ্কল্প করিয়া আসিয়াছিস।
অনন্তর, চন্দ্রপ্রভার আদেশ অনুসারে, সমভিব্যাহারী লোকেরা বন্ধন করিতে উদ্যত হইলে, চিরঞ্জীব নিতান্ত নিরুপায় ভাবিয়া, রাজপুরুষকে কহিলেন, দেখ, আমি এক্ষণে তোমার অবরোধে আছি; এ অবস্থায় আমায় কিরূপে ছাড়িয়া দিবে; ছাড়িয়া দিলে তুমি সম্পূর্ণ অপরাধী হইবে। তখন রাজপুরুষ চন্দ্রপ্রভাকে কহিলেন, আপনি উঁহারে আমার নিকট হইতে লইয়া যাইতে পারিবেন না, উনি অবরোধে আছেন। এই কথা শুনিয়া, চন্দ্রপ্রভা কহিলেন, অহে রাজপুরুষ! তুমি সমস্তই স্বচক্ষে দেখিতেছ ও স্বকর্ণে শুনিতেছ, তথাপি কোন বিবেচনায় উঁহারে ছাড়িয়া দিতে চাহিতেছ না। উঁহার এই অবস্থা দেখিয়া, বোধ করি, তোমার আমোদ হইতেছে। রাজপুরুষ কহিলেন, আপনি অন্যায় অনুযোগ করিতেছেন; উঁহাকে ছাড়িয়া দিলে, আমি পাঁচ শত টাকার দায়ে পড়িব। চন্দ্রপ্রভা কহিলেন, তুমি আমায় উঁহারে লইয়া যাইতে দাও;