পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মতিয়া বিবি।
১৯

সিন্দুকের চাঁবি লইয়া পুনরায় সেই সিঁদের মধ্য দিয়া বহির্গত হইয়া গিয়াছে।

 এখন যাহা অনুমিত হইল তাহা সত্য; কিন্তু এখন কর্ত্তব্য কি?

 পাঠকগণ বলিয়া বসিবেন, এখনকার কর্ত্তব্য কি, তাহা একটী পঞ্চমবর্ষীয় বালকও অনায়াসে বুঝিতে পারে। এখন পুলিসের কর্ত্তবা, যে দস্যুর দ্বারা এই ভয়ানক কার্য্য সাধিত হইয়াছে, অনুসন্ধান করিয়া তাহাকে ধৃত করা ও যাহাতে দোষীর উপযুক্ত দণ্ড হয়, তাহার উপায় করা।

 কথাটা যেরূপ সহজ, কার্য্যটা ততদূর সহজ নহে। গভীর অন্ধকারের মধ্যে আপনার শরীর আবৃত করিয়া যে দস্যু তারামণির গৃহে সিঁদ দিল, ও অপরের অলক্ষিতে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া সেই ঘরের একমাত্র অধিকারিণীকে হত্যা করিয়া নির্ব্বিবাদে বাহির হইয়া চলিয়া গেল, এখন বলুন দেখি তাহার অনুসন্ধান কিরূপে হইতে পারে? যাহাকে কেহ দেখিল না, যাহার কথা কেহ শুনিল না, অনুসন্ধান করিয়া তাহাকে বাহির করা ও হত্যাপরাধে তাহাকে দণ্ডিত করা, কিরূপ দুরূহ কার্য্য; তাহা অনুমান করিয়াই স্থির করা যায় না। কার্য্যে পরিণত করা একেবারে অসম্ভব হইলেও, সেই অসম্ভবকে আমাদিগকে সম্ভরপর করিয়া লইতে হইবে। ইহা অপেক্ষা অসম্ভব বিষয় আর কি হইতে পারে?

 সম্ভব হউক আর অসম্ভব হউক; মনের ইচ্ছা কার্য্যে পরিণত করিবার আশা থাকুক আর নাই থাকুক, এই অসম্ভব কার্য্য সম্ভবে পরিণত করিবার চেষ্টা আমাদিগকে দেখিতেই হইবে। যে কার্য্যের নিমিত্ত বেতন গ্রহণ করিয়া থাকি, পারি আর না পারি, সেই কার্য্য যাহাতে সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়, তাহার