সেই সংবাদদাতার সঙ্গে তৎক্ষণাৎ থানা হইয়া বহির্গত হইলাম। তারামণি যে বাড়ীতে বাস করিতে, সেই বাড়ীতে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম, উহা একখানি খোলার ঘর, কিন্তু উহার পোঁতা বেশ উঁচু। ঐ একখানি ঘর লইয়াই একখানি বাড়ী। ঐ ঘরের সম্মুখে একটী বারান্দা আছে মাত্র। রন্ধনাদি ঐ বারান্দার এক পার্শ্বেই হইয়া থাকে। ঐ ঘরখানি প্রাচীর অথবা অপর কোনরূপ আবরণের দ্বারা বেষ্টিত নহে, উহার চতুষ্পার্শ্বই খোলা। চতুষ্পার্শ্ব হইতেই ঐ ঘরের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হওয়া যায়। ঐ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিবার কেবল একটীমাত্র দরজা, উহা এখন পর্য্যন্ত ভিতর হইতে বদ্ধ আছে। ঐ দরজায় সামান্য একটু ধাক্কা দিয়া দেখিলাম, কিন্তু উহা সহজে খুলিল না। ঐ ঘরখানি চতুর্দ্দিক উত্তমরূপে দেখিলাম। দেখিলাম, উহার পশ্চাদ্ভাগের পোঁতার গায়ে, বেড়ার নীচে একটী প্রকাণ্ড সিঁদ কাটা রহিয়াছে। সদাসর্বদা যেরূপ পরিমাণের সিঁদ দেখিতে পাওয়া যায়, তাহার অপেক্ষা এই সিঁদের পরিমাণ একটু বড়। উহার মধ্য দিয়া ছোট বড় সকল প্রকার মনুষ্যই ঐ ঘরের ভিতর প্রবেশ ও ঘর হইতে বহির্গত হইতে পারে। খুব বড় বড় সিন্দুক, বাক্স, পেঁটরা প্রভৃতি অনায়াসেই উহা দিয়া বাহির করিয়া লওয়া যায়।
সিঁদের নিকট গমন করিয়া তাহার মধ্য দিয়া ঘরের ভিতরের অবস্থা যদি কিছু দেখিতে পাওয়া যায়, তাহার চেষ্টা করিলাম; কিন্তু ঘরের মধ্যে অন্ধকার বলিয়া বোধ হইতে লাগিল, কিছুই দেখিতে পাইলাম না। তখন অনন্যোপায় হইয়া ঐ ঘরের দরজা ভাঙ্গিয়া ঐ ঘরের ভিতর প্রবেশ করিবার চেষ্টা করিতে হইল।