পাতা:মধ্যভারত - জলধর সেন.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sessists DAV “চৈত্য” ও “বিহার’ এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। যেখানে ভক্তগণ সমবেত হ’য়ে উপাসনা ক’রতেন, তাকে বলে “চৈত্য” ; আর যেখানে ভিক্ষু সন্ন্যাসীরা বাস করতেন, তাকে বলে ‘বিহার’। চৈত্যগুলির মধ্যে তথাগত বুদ্ধের এক একটি স্তপ নিৰ্ম্মিত আছে। ২৯টি গুহার মধ্যে পাচটি “চৈত্য”। বাকী সবগুলিই “বিহার’ । দেখলেই বোঝা যায়, এটি একসময় বৌদ্ধদের একটি প্রধান আশ্রম ছিল। একমাত্ৰ ‘ইলোর গুহা’ ছাড়া ভারতের অন্য কোথাও আর প্রাচ্যের প্ৰাচীনতম স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রাঙ্কন-শিল্পকলার এমন বিরাট নিদর্শন একত্র দেখতে পাওয়া যায় না। অজন্তা ও ইলোরার তুলনায় “বাঘগুষ্ঠা ‘কারলী’ বা ‘এলিফাণ্টা’ প্ৰভৃতিকে ক্ষুদ্ৰ ব’লে মনে হয়! অজন্তাঃ খৃঃ পূঃ প্ৰথম শতাব্দী থেকে আরম্ভ ক’রে খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত ভারতীয় বৌদ্ধশিল্পের একটি ধারাবাহিক পরিচয় পাওয়া যায়। সাতশ' বছর ধরে বৌদ্ধ যুগের শিল্পীরা এই পৰ্ব্বত-গাত্রে তাদের অসামান্য কলানৈপুণ্যের। যে বিপুল পরিচয় রেখে গেছেন, তার মূল্য শুধু শিল্প হিসাবেই নয়, তদানীন্তন সমাজের রীতি-নীতি, পোষাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার এবং আচার-ব্যবহার প্রভৃতিরও যে সন্ধান এর মধ্যে পাওয়া যায়, ইতিহাসের দিক দিয়ে তার মূল্যও অনেক । অজন্তার স্থাপত্য-কলা, অজন্তার ভাস্কৰ্য্য, অজন্তার রঙীন প্ৰাচীর-চিত্রগুলি দেখতে দেখতে যখন দর্শকের মনে ভারতের গৌরবময় যুগের একটি অনবদ্য ছবি ফুট ওঠে, তখন বিস্ময়ে, পুলকে, শ্রদ্ধায় মাথা নত ক’রে, প্ৰাচীন ভারতের সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্বকে স্বীকার না ক’রে পারা যায় না ; কারণ, পৃথিবীর । আর কোথাও না কি ঠিক এমনটি আর নাই প্ৰত্যেক গুহার বিশেষত্ব হচ্ছে—একটু একটু ক’রে পাহাড়টির ভিতর দিক কেটে বা কুঁদে অসংখ্য স্তম্ভ-পরিবৃত এক একটি চৈত্য । 8