পাতা:মধ্যভারত - জলধর সেন.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মধ্যভাল্লভ る。8 ফিরবার পথে পাথরডি নামে একটী ক্ষুদ্র গ্রামে উপস্থিত হন। সেই গ্রাম-প্ৰান্তে একটী মন্দির ছিল ; মন্দিরের সুমুখে প্ৰকাণ্ড সরোবর, চারিদিকে উন্মুক্ত প্ৰান্তর। সময়ও অপরাহ্ন। রাজা আদেশ প্রচার করলেন যে, এই সুন্দর স্থানেই তারা সে দিনের মত বিশ্রাম করবেন। তঁর সঙ্গের সৈন্যগণ সেই বিস্তীর্ণ প্ৰান্তরে ছাউনি করলেন। রাজা সরোবরতীরস্থ মরুতী দেবীর মন্দিরের চত্বরে গিয়ে বসলেন। গ্রামের মধ্যে সাড়া পড়ে গেল। সকলেই সৈন্য, গাড়ী ঘোড়া, লোক লঙ্কর দেখবার জন্য মারতী দেবীর মন্দির সম্মুখে উপস্থিত হোলো। গ্রামের ধারা প্রধান ব্যক্তি তারা সকলেষ্ট সমাগত চয়ে রাজা মলহর রাওকে অভিবাদন করে তার অনতিদূরে আসন গ্রহণ করলেন। এই পাথরডি গ্রামে আনন্দ রাও সিন্দে নামে একজন দরিদ্র ক্ষত্ৰিয় বাস করতেন। তিনি দরিদ্র হলেও ধাৰ্ম্মিক ও গ্রামের সকলের বিশেষ । প্রতিভাজন ছিলেন। তঁার একটি কন্যা ছিল। গ্রামের দৈবজ্ঞ ঠাকুর এই মেয়েটার কোষ্ঠবিচার ক’রে বলেছিলেন, অহল্যা রাজরাণী হবে। সকলেই এ কথায় উপহাস করেছিলেন ; কিন্তু ঠাকুর বিশেষ দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেছিলেন, জ্যোতিষ গণনা ঘদি মিথ্যা না হয়, তা হলে এ মেয়েকে রাঞ্জরাণী হতেই হবে। গণংকার ত ভবিষ্যদবাণী করেই খালাস, এদিকে অহল্যার দরিদ্র পিতা আনন্দরাও কন্যার বিবাহের জন্য অস্থির হয়ে পড়লেন। একমাত্র মেয়েকে তিনি তৎকালোচিত লেখাপড়া শিখিয়েছেন, গৃহকৰ্ম্মে নিপুণা করেছেন, অতিথি-অভ্যাগতের দেবতা জ্ঞানে সেবা করতে শিখিয়েছেন, দরিদ্র-কন্যাকে দরিদ্রের কষ্টে কাতর হতে শিখিয়েছেন। অহল্যা পরমাসুন্দরা না হ’লেও তার মুখে এমন একটা লাবণ্য ছিল যে, তাকে দেখলেই স্নেহ প্ৰকাশ করতে ইচ্চা হোতে। গুণ ত মেয়ের সবই ছিল, কিন্তু আনন্দ রাওয়ের দারিদ্র্যই এত গুণের পথরোধ কবে দাঁড়াল ।