পাতা:মনের নিয়ন্ত্রণ যোগ-মেডিটেশন - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পড়ে। তখন নেপালের অবস্থা ছিল হুবহু অবরুদ্ধ বার্লিনের মতাে। যে কারণে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকাকে ধিক্কার জানাই, সেই একই কারণে বা অপরাধের জন্যে সাম্রাজ্যবাদী ভারতকে কেন ধিক্কার জানাবাে না? একই কারণের জন্যে দুরকম ব্যবহার করলে তা হবে আমাদেরই দ্বিচারিতা, ভণ্ডামী এবং বােধবুদ্ধির অভাবের পরিচয়। (তিন) “বিজ্ঞান চাই, সঙ্গে চাই দেশকে ভালােবাসা।” ‘দেশ’ বলতে এখানে কী বোেঝানাে হয়েছে? দেশের ভৌগােলিক অঞ্চলকে ভালােবাসা? দেশের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য প্রাণপণ করা? রবীন্দ্রনাথ তাঁর আত্মপরিচয়' গ্রন্থে লিখেছিলেন, “দেশ মানুষের সৃষ্টি। দেশ মৃন্ময় নয়, সে চিন্ময়। মানুষ যদি প্রকাশমান হয় তবে দেশ প্রকাশিত। সুজলা সুফলা মলয়জশীতলা ভূমির কথা যতই উচ্চকণ্ঠে রটান ততই জবাবদিহির দায় বাড়বে, প্রশ্ন উঠবে প্রাকৃতিক দেশ তাে উপাদান মাত্র, তা দিয়ে মানবিক সম্পদ কতটা গড়ে তােলা হল। মানুষের হাতে দেশের জল যদি যায় শুকিয়ে, ফল যদি যায় মরে, মলয়জ যদি বিষিয়ে উঠে মারীবীজে, শস্যের জমি যদি হয় বন্ধ্যা, তবে কাব্য কথায় দেশের লজ্জা চাপা পড়বে না। দেশ মাটিতে তৈরি নয়, দেশ মানুষে তৈরি।” রবীন্দ্রনাথের একথা আমরা ভুলে থাকি। ভুলিয়ে রাখে রাষ্ট্রের মগজধােলাইয়ের রাজনীতি। রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারের তাবেদার বুদ্ধিজীবীরা দেশের জনগণ থেকে সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মী সকলেরই মগজধােলাই করে ঢুকিয়ে দিয়েছে ভারত একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। মগজ-কম্পিউটারে প্রােগ্রামিং করে আরও ঢােকান হয়েছে—ভারত সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী এক মহান দেশ। আমরা কি তােতাপাখির মতাে শেখান বুলি কপচে যাবাে? মগজ-কম্পিউটার ও প্রােগ্রামিং মগজ বা মস্তিষ্ক এক অনন্য কম্পিউটার। ছােটবেলা থেকেই আমাদের বিশ্বাস-অবিশ্বাস, কুসংস্কার-সুসংস্কার, প্রশ্নহীন মন-মুক্ত মন সবই প্রােগ্রামিং করে ঢােকান হতে থাকে। এই প্রােগ্রামিং-এর ওপর নির্ভর করেই মানুষের ব্যবহার, ব্যক্তিত্ব, ভাবনাচিন্তা, জ্ঞান, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, সাহস-ভয় ইত্যাদি ফাংশন’

করতে থাকে। যতই বয়স বাড়ে ততই নতুন-নতুন বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-অধ্যাপক

১২