পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭০
ময়ূখ

করিল। বহাদর খাঁ কাম্বোহ ও খাজা শের নৌকা সংগ্রহ করিয়া হুগলীর নিম্নে একটি নৌসেতু নির্ম্মাণ করিলেন, ইহার ফলে হুগলী বন্দরের সমস্ত গরাব কোশা ও জালিয়া ডিঙ্গা বাদশাহী নাওয়ার কর্ত্তৃক ধৃত হইল। এইবার স্থলপথে পদাতিক ও জলপথে নৌসেনা হুগলী বন্দর ও দুর্গ আক্রমণ করিল, দুর্গের বহির্দ্দেশে অবস্থিত নগর ও বন্দর আল্লা ইয়ার খাঁর দখলে আসিল।

 তিন মাস যুদ্ধের পরে গোকুলবিহারী দুর্গ অধিকারের এক নূতন পথ আবিষ্কার করিলেন। গির্জ্জার নিকটে হুগলী দুর্গের পরিখা সঙ্কীর্ণ ছিল, গোকুল বিহারীর নৌসেন সুড়ঙ্গ কাটিয়া সেই স্থানের জল বাহির করিয়া দিল। তখন বাদশাহী সেনা ভীষণ বেগে সেই স্থান আক্রমণ করিল।

 এই সময়ে আল্লা ইয়ার খাঁর শিবিরে পর্ত্তুগীজ ফিরিঙ্গীর এক নূতন শত্রু আসিয়া উপস্থিত হইল। একজন আংরেজ বণিক্‌ পর্ত্তুগীজ দস্যুর আক্রমণে হৃতসর্ব্বস্ব হইয়া গোয়ায় আসিয়াছিল; তথায় পর্ত্তুগীজ পাদ্রীগণের অত্যাচারে তাহার চক্ষুদ্বয় নষ্ট হইয়াছিল। দৈবচক্রে হুগলী দুর্গ অবরোধের সময় সেই অন্ধ আংরেজ বণিক্‌ সপ্তগ্রামে আসিয়া উপস্থিত হইল। সে স্বদেশে যুদ্ধব্যবসায়ী ছিল, সুড়ঙ্গ কাটিয়া বারুদ প্রয়োগে কিরূপে দুর্গপ্রাকার ধ্বংস করিতে হয় সে তাহা ফরাসী দেশে শিক্ষা করিয়াছিল। তাহার সাহায্যে ময়ূখ গির্জ্জার নিম্নে সুড়ঙ্গ কাটিয়া দুর্গপ্রাকার ধ্বংসের চেষ্টা