পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৮৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭৮
ময়ূখ

আলিঙ্গনে আবদ্ধ করিল। বাদশাহ্‌ মুখ ফিরাইয়া দাঁড়াইলেন।

 বহুক্ষণ পরে আত্মসম্বরণ করিয়া ময়ূখ গায়কের সন্ধানে চলিলেন। এখন যে স্থানে তাজগঞ্জের বাজার তখন সেখানে বিস্তৃত তৃণক্ষেত্র ছিল। ময়ূখ দেখিতে পাইলেন যে প্রান্তরের সীমায় এক কৃশকায় বিকলাঙ্গ অসিতবরণ বৃদ্ধ ধূলায় বসিয়া আছে। ময়ূখ তাহার নিকটে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমিই কি গীত গাহিতেছিলে?”

 বৃদ্ধ পরিষ্কার বাঙ্গালায় কহিল, “হাঁ বাবা; চলিবার শক্তি নাই, মনে করিলাম গীত গাহিলে যদি কেহ অনুগ্রহ করিয়া আসিয়া লইয়া যায়।”

 “তুমি কোথায় যাইবে?”

 “ঐ সমাধির নিকটে।”

 “আমি তোমাকে ঐখানে লইয়া যাইতেই আসিয়াছি।”

 ময়ূখ বৃদ্ধকে ক্রোড়ে উঠাইয়া সমাধির নিকটে লইয়া গেলেন। বৃদ্ধ বস্ত্রমধ্য হইতে একটি বহুমূল্য হীরকাঙ্গুরীয়ক বাহির করিয়া ময়ূখের হস্তে দিল। ময়ূখ তাহা বাদশাহের হস্তে দিলেন। বাদশাহ্‌ অঙ্গুরীয়ক দেখিয়া চমকিত হইলেন। তিনি কহিলেন, “ফকির, তুমি সপ্তগ্রামের সেই বৈষ্ণব?”

 বৃদ্ধ কহিল, “হাঁ মহারাজ, আমার কিছু প্রার্থনা ছিল।”

 “প্রাসাদে গেলে না কেন?”