পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮
ময়ূখ

নিকটেই বন্দুক আছে।” “সেগুলি ভরিয়া রাখিলে হয় না?” “চলুন, বাহিরে যাই।”

 তিন জনে কক্ষের বাহিরে অসিলেন। তখন শুক্লা নবমীর জ্যোৎস্না চারিদিকে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিয়াছে, অন্ধকার কূলে কূলে বিটপিরাজির আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে। প্রৌঢ় কর্ণধারকে ডাকিলেন, সে একজন নাবিকের হস্তে হাল দিয়া তাঁহার নিকটে আসিল। প্রৌঢ় কহিলেন, “কেনারাম, প্রস্তুত হও, বোধ হইতেছে রাত্রিতে লড়াই করিতে হইবে।”

 কেনারাম কিছুমাত্র বিস্মিত না হইয়া কহিল, “কাহার সহিত হুজুর?” “ফিরিঙ্গি হারমাদের সহিত।” “এখানেও ফিরিঙ্গি? আমরা ভাবিয়াছিলাম যে, সারা বাঙ্গলা মুলুকে একমাত্র সাতগাঁই জ্বলিয়া খাক হইয়া গেল। তবে তোপ দুইটা বাহির করি?” “কর। বারুদের অভাব হইবে না ত?” “হুজুর, যথেষ্ট বারুদ আছে। অভাব হইবে লোকের, এত বড় ছিপ লইয়া লড়াই করিতে হইলে তিন শত লোকের প্রয়োজন, দুই শত নৌকা বাহিবে, আর এক শত লড়াই করিবে।” “তোমাদের বন্দুকগুলি ভরিয়া রাখিতে বল।” “সমস্ত বন্দুক প্রস্তুত আছে, কেবল তোপ দুইটী ভরিয়া রাখিতে হইবে।” “শীঘ্র ভরিয়া লও।”

 কর্ণধারের আদেশে দশ পনর জন মাল্লা নৌকাগর্ভ হইতে দুইটী তোপ তুলিয়া তাহা নৌকার উপরে সাজাইল এবং কর্ণধারের নির্দ্দেশ অনুসারে তাহা নৌকার উপরে বসাইয়া