মুক্তবেণীতে সরস্বতী ও গঙ্গাসঙ্গমের নিকটে একটি তিন্তিড়ি বৃক্ষতলে বসিয়া একটি যুবক একমনে গঙ্গ-প্রবাহে অসংখ্য নৌবাহিনীর সম্মিলন দেখিতেছিল। সরস্বতী তখন প্রায় বিগতযৌবনা, কিন্তু তথাপি বর্ত্তমান সময়ের ন্যায় কঙ্কালাবশিষ্টা হয় নাই। তখনও চারি পাঁচ হাজার মনের নৌকা স্বচ্ছন্দে হিজলি হইতে সপ্তগ্রামে আসিত এবং বৎসরের বারমাস নদীতে নৌকা চলিত। সরস্বতীর মোহানায় ক্ষুদ্র বৃহৎ অনেকগুলি নৌকা ভাঁটার জন্য অপেক্ষা করিতেছিল, তাহার মধ্যে দুই একখানি বজ্রাও ছিল। একখানি বজরার কামরার সম্মুখে দুইটি মুসলমান রমণী বসিয়াছিল, তাহাদিগের মধ্যে একজন যুবতী ও রূপসী, অপর প্রৌঢ়া ও কুরূপা। তাহাদিগের পোষাক পরিচ্ছদ দেখিলে বোধ হয় যে তাহারা সম্ভ্রান্তবংশীয়া, অথচ তাহারা নর্ত্তকী; কারণ কোন মুসলমান কূলবধূ দিবসে জনসমাজে বাহির হয় না। রূপসী কুরূপাকে কহিল, “ফতেমা, ঐ তিন্তিড়ি বৃক্ষতলে যে কাফের যুবক বসিয়া আছে, যদি তাহাকে পাই তবে বিবাহ করি।” প্রৌঢ়া বিরক্ত হইয়া কহিল, “তোমার বয়স হইয়াছে তথাপি গাম্ভীর্য্য আসিল না।
পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৭
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
আশিক ও মাসুক