পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪০
ময়ূখ

 তখন বিলাতে পিস্তলের ব্যবহার অল্পদিন আরম্ভ হইয়াছে, একটি দুইটি মাত্র হিন্দুস্থানে আসিয়াছে। পিস্তলের আওয়াজ হইল, একজন ফিরিঙ্গি আহত হইয়া পড়িয়া গেল; তাহা দেখিয়া পাদ্রী ও দ্বিতীয় ফিরিঙ্গি দূরে আর এক বৃক্ষকাণ্ডের পার্শ্বে আশ্রয় লইল। ময়ূখ ছুটিয়া বাহির হইয়া আহত ফিরিঙ্গির বন্দুক কাড়িয়া লইয়া পুনরায় বৃক্ষতলে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। ফিরিয়া আসিবার সময়ে দ্বিতীয় ফিরিঙ্গির বন্দুকের আর একটী গুলি আসিয়া তাঁহার বামহস্তে বিদ্ধ হইল। ময়ূখ তাহা গ্রাহ্য না করিয়া মুসলমানকে কহিলেন, “আপনার বন্দুক ধরা অভ্যাস আছে?” মুসলমান হাসিয়া কহিল, “আছে, আমি যুদ্ধ ব্যবসায়ী।” মুসলমান বন্দুক হাতে লইয়া কহিল, “গুলি ও বারুদ কই?” ময়ূখ কহিলেন, “অপেক্ষা করুন লইয়া আসি।” মুসলমান তাঁহার দক্ষিণ হস্ত ধারণ করিয়া কহিল, “কাফের, তুমি আহত হইয়াছ, এই বার আমার পালা। ফিরিঙ্গি যদি মুখ বাড়ায় তাহা হইলে গুলি চালাইও। যদি আমি মরি তাহা হইলে ফৌজদার কলিমুল্লা খাঁকে বলিও যে জহাঙ্গীরী আমলের একজন আমীর ফিরিঙ্গির হাতে মরিয়াছে।” মুসলমান উত্তরের অপেক্ষা না করিয়া ছুটিয়া বাহির হইল; তাহা দেখিয়া ফিরিঙ্গি যেমন মুখ বাড়াইল অমনই ময়ূখের পিস্তলের গুলি তাহার ললাটে বিদ্ধ হইল। তখন হিন্দুর পরিত্রাণের আশা ত্যাগ করিয়া স্থূলকায় লম্বোদর পাদ্রী হুগলীর দিকে পলায়ন করিল।

 যুদ্ধ শেষ হইয়াছে দেখিয়া ময়ূখ বৃক্ষকাণ্ডের আশ্রয় পরি-