পাতা:মরণের ডঙ্কাবাজে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মরণের ডঙ্কা বাজে

 একদিন সুরেশ্বর বিমলকে বল্লে— দেখ বিমল, কাল রাত্রে বড় একটা মজার স্বপ্ন দেখেচি—

 — কি স্বপ্ন?

 — তুমি আর আমি ছােট একটা অদ্ভুত গড়নের বজরা বা নৌকা করে সমুদ্রে কোথায় যাচ্ছি। সে ধরণের বজরা আমি ছবিতে দেখেচি, ঠিক বােঝাতে পারচিনে এখন।

 — তারপর?

 — তারপর ধোঁয়ায় চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল। খালি ধোঁয়া— বিশ্রী কালাে ধোঁয়া...

 — আমরা বাঁচলাম তাে!

 না খসলাম? কথা শেষ করে বিমল হো হো করে হেসে উঠল। সুরেশ্বর চুপ করে রইল।

 বিমল বল্লে— আমি একটা প্রস্তাব করি শােননা। চলো দু’জনে সিঙ্গাপুরে গিয়ে একটা জায়গা বেছে নিয়ে ডাক্তারখানা খুলি! তুমি তােমার কোম্পানীকে বলে ওষুধ আনাবে। বেশ লাভ হবে। আমি ডাক্তারী করবো।

 রেঙ্গুন থেকে জাহাজ ছেড়ে দুই দিন দুই রাত অনবরত যাওয়ার পরে চতুর্থ দিন ভােরে জমি দেখা গেল। রেঙ্গুনের মত সমতল ভূমি নয়, উচু নীচু যে দিকে চাও সেদিকে পাহাড়। উপকূলের চতুর্দ্দিকেই মাছ ধরবার বিপুল অয়ােজন, বড় বড় কালাে রঙের খুঁটি দিয়ে ঘেরা, জাল ফেলা। জেলেদের থাকবার টিনের ঘর। পালতোলা জেলে ডিঙিতে অহরহ তীর আচ্ছন্ন।