এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(৭)

 বালিকা নিজে সমুদ্র বাসিনী অতএব পৃথিবীর উপরিস্থিত জীব জন্তু ও আর আর বস্তু বিষয়ক বিবরণ শুনিতে অত্যন্ত ভাল বাসিত, পিতামহীকে প্রেমভাবে সর্ব্বদা জিজ্ঞাসা করিত, দিদি! তুমি জাহাজ, নগর, লোক এবং জন্তু বিষয়ে যাহা যাহা জান তাহা আমাকে বল। এই কথাতে রাজমাতা বলিলেন, পৃথিবীস্থ পুষ্পগণ হইতে নানা প্রকার রমণীয় সৌরভ নির্গত হয়, ইহা শুনিয়া রাজবালা তথাকার ফুল সকল অবশ্যই পরম সুন্দর হইবে, এই বিবেচনাতে তাহাদের কতই বা প্রশংসা করিল। আর সমুদ্রের অধোভাগস্থ ফুল হইতে সদ্‌গন্ধ বাহির হয় না বলিয়া মনে মনে কতই দুঃখ করিল। তাহার পিতামহী আরও বলিলেন যে তত্রস্থ অরণ্য সকল হরিদ্বর্ণ, তন্নিবাসী মৎস্যেরা[১] এমনি মধুর স্বরে গীত গায় যে তাহা শুনিয়া পাষাণ চিত্ত মানবের মন আর্দ্র হইয়া উঠে। তুমি পনেরো


  1. যদি পাঠক মহাশয়েরা সন্দেহ করিয়া মনে কিছু তর্ক করেন যে পৃথিবীস্থ মৎস্যেরা কি রূপে গীত গাইতে পারে? এই হেতু বিবেচনা করিতে হইবে যে সমুদ্রের অধঃস্থিত লোকেরা মৎস্য ব্যতীত অন্য কিছুই জানে না, এজন্য রাজকন্যার পিতামহী এই স্থলে পক্ষীকে মৎস্য রূপে বর্ণন্য করিয়াছেন। তাহা না করিলে ঐ অল্প বয়স্কা বালিকা তাঁহার কথা বুঝিতে পারিবে না।