এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(১২)

পিতৃ আজ্ঞায় রাজতনয়া সূর্য্যাস্ত সময়ে সমুদ্রের উপরিভাগে গেল, গিয়া দেখে যে দিবাকর অস্তাচলে উপবেশন করিতেছেন, তাহাতে যে শোভা হইয়াছে এমত সৌন্দর্য্য সে জন্মাবধি দেখে নাই। সে তথা হইতে প্রত্যাগত হইয়া আপন ভগিনীদিগকে কহিতে লাগিল, আহা! সূর্য্যাস্ত কালীন দেখিলাম যে সমুদায় আকাশটা একেবারে স্বর্ণের ন্যায় অর্থাৎ কাঁচা হরিদ্রার বর্ণ হইয়া উঠিয়াছে, মেঘ সকলের সৌন্দর্য্যের কথা কি বলিব, বর্ণনে রসনার সাধ্যাতীত হয়, লেখনী ও পরাভব মানে। লোহিত এবং ধূমল বর্ণের মেঘ সকল আমার মস্তকের উপর দিয়া গমনাগমন করিতেছিল, এক পাটা সাদা উড়নীর মত কতক গুলা শুভ্রবর্ণ বকপক্ষী সমুদ্র পার হইয়া অস্তাচল নিবাসী সূর্য্যের নিকট উড়িয়া যাইতেছিল। মনে মনে বাসনা করিলাম, আমিও সন্তরণ করিয়া সূর্য্যের নিকট গমন করি, কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ যাইতে যাইতে দিনকর একেবারে অধোগমন করিলেন, তাহাতে তাঁহার অপূর্ব্ব সৌন্দর্য্য আর আমার নয়ন গোচর হইল না, আকাশ এবং জল হইতে সকল বর্ণই এককালীন বিলুপ্ত হইয়া গেল।

 পর বৎসর তৃতীয়া কন্যাও ঐ প্রকার আজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া সমুদ্রের উপরিভাগে গমন করিয়াছিল।