এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(৭৩)

তেছেন, জন্মের মত নত হইয়া তাঁহার পরম সুন্দর ললাটে চুম্বন করিল, আকাশমণ্ডলের প্রতি নেত্রপাত করিয়া দেখে, প্রভাত, সুন্দরী গোলাপী রঙ্গে আবৃতা হইয়া গমন করিতেছেন, কিয়ৎক্ষপ তীক্ষ্ণ ছুরিকাকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিল, পুনর্ব্বার রাজকুমারকে অবলোকন করিয়া শুনিতে পাইল, তিনি নব বিবাহিতা কন্যার ভাবে মুগ্ধ হইয়া স্বপ্ন কালেও তাহার নাম ধরিয়া ডাকিতেছেন, একবার আপন স্বভাব প্রাপ্ত হইয়া ছুরি খাবা দৃঢ় করিয়া ধরিল, কিন্তু যাহার মঙ্গল সর্ব্বান্তঃকরণের সহিত চিরকাল প্রার্থনা করিয়াছে, তাহার হৃদয় কমল কিরূপে সে ছুরিকা দ্বারা বিদ্ধ করিতে পারে, এজন্য পরক্ষণেই তাহা সমুদ্র তরঙ্গে টান মারিয়া নিঃক্ষেপ করিল। জল মধ্যে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়িলে যেরূপ শব্দ এবং দৃশ্য হইয়া থাকে, ছুরিখানা যেখানে পড়িল সেখানে সেইরূপ রক্তবর্ণের আভা প্রকাশ করিল। মরিবার সময় যেমন মানুষে বিকট মূর্ত্তিতে শেষ চাউনি চাইয়া মরে, ঐ নারীও রাজনন্দনের প্রতি মুহূর্ত্তেক সেইরূপ নিরীক্ষণ করিয়া এককালে জাহাজ হইতে সমুদ্রের জলে ঝাঁপিয়া পড়িল, এবং ক্ষণমাত্রে তাহার বোধ হইল দেহটা ক্রমে সমুদ্র ফেনায় লীন হইয়া যাইতেছে।