এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(৭৬)

অংশী হইতে পারিব। ওগো অবলা মৎস্যনারী তুমিও আমাদিগের ন্যায় সর্বান্তঃকরণের সহিত মনুষ্যের হিত চেষ্টা করিয়াছ। আহা! কত দুঃখ সহিয়াছ তাহা বলিতে পারা যায় না, তথাপি ভৌতিক দেহ প্রাপ্ত হইয়া তোমার আত্মাকে শূন্যে থাকিতে হইল, ভয় নাই ভয় নাই, তিন শত বৎসর গত হইলে তুমি অমর আত্মা পাইবে।

 তখন মৎস্যনারী আপনার সুনির্ম্মল চক্ষু দুটি সূর্য্যের প্রতি ফিরাইল, যাহাতে তাহা প্রথমতঃ অশ্রু পূর্ণা হয়। জন্মাবধি এতকাল পর্য্যন্ত কখনই ঐ চক্ষুদ্বয়ে অশ্রু পতন হয় নাই, এজন্য পূর্ব্বে কতবার যে দীর্ঘনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া হাহাকার শব্দ করিয়াছে। কিয়ৎক্ষণ পরে রাজকুমারের জাহাজের প্রতি নেত্রপাত করিয়া দেখে, তিনিও তাঁহার পরম রূপসী ভার্য্যা উভয়েই মুক্তাবৎ ফেনার প্রতি নিরীক্ষণ করিয়া তাহাকে অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছেন, শোকে অতিশয় কাতর, মনে মনে যেন স্থির করিয়াছেন বুঝি কন্যা মনের বিষাদে জলে ঝাঁপদিলেন। রাজকুমারের এই অবস্থা দেখিয়া দুঃখিত মনে সে তাঁহার নিকটে গিয়া তাঁহাকে পাখাব্যজন করিতে লাগিল, এবং প্রণাধিকা তৎপত্নীরও মুখ চুম্বন করিল, কিন্তু দুই জনের একজনও তাহাকে দেখিতে পাইল না,