পাতা:মস্তকের মূল্য - সরোজনাথ ঘোষ.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজার অর্ঘ্য। কোন পিতামাতা সন্তানকে জন্মের মত বিসর্জন করিতে পারে ? কিন্তু উপায় কি ? দারিদ্র্য যে তাহাদিগকে প্ৰতিদিন নানারূপে লাঞ্ছিত করিতেছে । শিবদাস বিসাদ-গম্ভীরকণ্ঠে বলিল, “মোক্ষদা, বড় কঠিন কাজ, তাহা আমি জানি। কিন্তু উপায় নাই। মৃত্যু তিল তিল করিয়া শিশু দু'টিকে গ্ৰাস করিতেছে, দেখিতেছি না ? দুর্ভিক্ষের কবল হইতে উহাদিগকে বাচাইবার আর কোনও পথ নাই। এত চেষ্টা করিলাম, কোথাও একটা সামান্য বেতনেরও চাকুরী মিলিল না। দুরে গিয়া যে চেষ্টা করিব, সে সুবিধা ও সুযোগ ও নাই । তাহার উপর আমার স্বাস্থ্যও ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। তোমাকে, এতদিন বলি নাই, কিন্তু আমি বেশ বুঝিতে পারিতেছি, আমার দুনিয়ার লীলা শেষ হইতে আর বড় বিলম্ব নাই। এখন ভাবিয়া দেখ, আমার অবর্তমানে নিরাশ্রয় ও নিঃসম্বল অবস্থায় আপোগণ্ড শিশু দু'টিকে লইয়া তুমি বঁাচিবে কিরূপে ? বাড়িখানি ও বন্ধক, মাথা রাখিবারও যে স্থান পাইবে না। যদিও বা কোনরূপে বঁাচিয়া থাক, শিশু দুটি শিক্ষার অভাবে চোর-ডাকাত হইয়া উঠিবে। পেটের জ্বালা ভয়ানক। তার চেয়ে যদি একটির মায়া ত্যাগ কর, সে খাইয়া পরিয়া সুখে থাকিবে, লেখাপড়া শিখিয়া মানুষ হইবে। বিনিময়ে যে টাকা পাইবে, বুঝিয়া চলিলে, ঋণ শোধ দিয়াও ছোট ছেলেটিকে মানুষ করিয়া তুলিতে পরিবে ।” 8)