পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৫ দশম পরিচেচ্ছদ আনাল হক্‌” বলিয়া দিক্ দশ বিকম্পিত করিয়া তুলিলেন । কি আশশ্চৰ্য্য অলৌকিক ঘটনা ! বিধাতার কি বিচিত্ৰ লীলা ! যে শব্দের উচ্চারণে বাগদাদের জনসাধারণ মনসুরের প্রাণহন্তারক হইয়া দাড়াইয়াছে, এক্ষণে তাহার উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে সেই নিষিদ্ধ ‘অনাল হক্‌’ শব্দ তাহাদেরই রসনা হইতে অনৰ্গল বাহির হইতে লাগিল । কে যেন সজোরে তাহাদের রসনা-যন্ত্ৰ ঘূৰ্ণিত করিয়া সেই ধ্বনি বাহির করিতে লাগিলেন । কেহই নিস্তত্ব নহে, সকলেই সেই এক-ই ধুয়ায় উন্মত্ত । কেবল যে নর-মুখেই এই ধ্বনি, তাহা নহে ; নিজীব জড়পদাৰ্থ এবং বৃক্ষ-লতাদিও ঐ ধ্বনি বহিৰ্গমনে ক্ষান্ত রহিল না । মানবমণ্ডলীর মুখে আনাল হক, পদ-দলিত দূৰ্ব্বাদলে আনাল হক্‌, ইষ্টক-প্ৰস্তর মৃৎখণ্ডে আনাল হক, তরু-লতা-গুলো আনাল হক, অলক্ষ্য বায়ু সাগরে আনাল হক, উডীয়মান মেঘমালায় আনাল হক্‌, পশু পক্ষি-কীট-মুখে আনাল হক, এইরুপ যে দিকেই দেখা যায়, যে দিকেই কৰ্ণপাত করা যায়, সেই দিকস্থ যাবতীয় পদাৰ্থ হইতেই ঐ একই শব্দের মুহুমুহু বিনিৰ্গমন শ্ৰতিগোচর হইতে লাগিল । আহা ! এতদপেক্ষা বিস্ময়ের বিষয়—আমানুষিক অপূৰ্ব্ব ঘটনা অার কি হইতে পারে ? অারও আশচৰ্য্য এই যে, যাহারা বিরুদ্ধপক্ষ, তাহাদিগকেও আজ অপরাধীর দণ্ডবিধান করিতে আসিয়া বৃক্ষ-লতা-কীট-পতঙ্গাদির সহিত সেই একবিধ দোষেই দোষী প্ৰমাণিত হইতে হইল। ইহা দৈবের কৌশল, না বিড়ম্বনা ? না ভক্তের মাহাত্ম্য-শক্তির এক অত্যুজ্জল নিদৰ্শন ? কে ইহার সদুত্তর দিবেন ?